রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :২১ আগস্ট, ২০২৪ ৮:৩৭ : অপরাহ্ণ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী-এমপি এবং বাধ্যতামূলক অবসর ও চুক্তি নিয়োগ বাতিল হওয়া সচিবদের নামে বরাদ্দ কূটনৈতিক পাসপোর্ট (লাল পাসপোর্ট) বাতিল করা হয়েছে।
আজ বুধবার পাসপোর্ট অধিদপ্তরকে তাদের পাসপোর্ট বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।
মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মশিউর রহমান বলেন, আমরা এরই মধ্যে অভিবাসন ও পাসপোর্ট অধিদফতরকে (ডিআইপি) এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা প্রক্রিয়াটি শুরু করেছে এবং শিগগিরই আদেশ জারি করা হবে।
জানা গেছে, লাল পাসপোর্ট বাতিল হয়ে গেলে, যাদের নামে ফৌজদারি মামলা রয়েছে বা গ্রেপ্তার হয়েছেন-এমন সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সাধারণ পাসপোর্ট পেতে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে আদালতের আদেশ পাওয়ার পরই তারা সাধারণ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
মশিউর রহমান বলেন, যদি কোনো কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী নতুন পাসপোর্ট নিতে চান, তাহলে তাকে অবশ্যই প্রথমে কূটনৈতিক বা লাল পাসপোর্টটি জমা দিতে হবে এবং তারপর আইন অনুযায়ী সাধারণ পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে তার সরকারের কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী-এমপি গ্রেপ্তার হয়েছেন। কেউ কেউ গ্রেপ্তার এড়াতে সরকার পতনের আগেই বিদেশে পাড়ি দেন।
ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কূটনৈতিক পাসপোর্ট বা লাল পাসপোর্টধারী ছিলেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই স্বাক্ষরিত সমঝোতা অনুযায়ী, সেই পাসপোর্টের সুবাদে তিনি অন্তত দেড় মাস কোনো ভিসা ছাড়াই অনায়াসে ভারতে অবস্থান করতে পারবেন।
গত ৫ আগস্ট দেশে থেকে পালিয়ে ভারতে যান তিনি। ভারতের আইন অনুযায়ী আর ২৯ দিন দেশটিতে থাকতে পারবেন শেখ হাসিনা। যদি না এর মধ্যে সেই পাসপোর্ট ‘রিভোকড’ বা প্রত্যাহৃত হয়। তাই বর্তমান অবস্থান সম্পূর্ণ আইনসম্মত, ভারতের এ ক্ষেত্রে আলাদা করে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ারও প্রয়োজনও নেই।
অন্যদিকে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টধারী। ফলে তিনি ভারতে অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পাবেন। এই সুবিধায় তিনি যতদিন খুশি ভারতে থাকতে পারবেন।
পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ নতুন সরকার গঠন হলে মন্ত্রী-এমপিরা সংসদের মেয়াদকাল অর্থাৎ পাঁচ বছরের জন্য কূটনৈতিক পাসপোর্ট (লাল পাসপোর্ট) পেয়ে থাকেন। সংসদের মেয়াদ শেষ হলে পাসপোর্টের বৈধতাও শেষ হয়ে যায়। তবে মন্ত্রী-এমপিদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট (লাল পাসপোর্ট) বাতিলের আদেশ এলে সাধারণত বাতিল করা হয়। এরপর বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে যে কেউ সাধারণ পাসপোর্ট (সবুজ রঙের) পাওয়ার অধিকার রাখেন। তবে কারও নামে যদি ফৌজদারি মামলা থাকে তবে তিনি সাধারণ পাসপোর্ট পাবেন না। সে ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশনা থাকলেই কেবল তিনি সাধারণ পাসপোর্ট প্রাপ্ত হবেন।
আরও পড়ুন:
কতদিন ভারতে থাকতে পারবেন শেখ হাসিনা?
হত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে জবাবদিহির মুখোমুখি দেখতে চায় জাতিসংঘ