শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪ | ২ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৪ রবিউস সানি, ১৪৪৬

মূলপাতা আইন-আদালত

সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে ১০ দিনের রিমান্ডে নিলো ডিবি


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১৪ আগস্ট, ২০২৪ ৭:১৩ : অপরাহ্ণ
ঢাকা সিএমএম আদালতে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক।
Rajnitisangbad Facebook Page

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি পুলিশ।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ তাদের রিমান্ডে পাঠান।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে এক হকারের মৃত্যুর ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় তাদের রিমান্ডে পাঠানো হয়।

তবে রিমান্ড শুনানিতে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে তাদেরকে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাদের বিচার চেয়ে ঢাকার সিএমএম আদালত চত্বরে সাধারণ জনতা ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে আসামিদের প্রিজনভ্যান লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তারা নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা নৌপথে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় কোস্টাগার্ড তাদের আটক করে।

এরপর গতকাল রাতে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়।

সূত্রে জানা গেছে, রাতভর ডিবি অফিসের হাজতখানায় ছিলেন সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হক। তাদের জন্য ছিল না কোনো বিশেষ ব্যবস্থা। অন্য আসামিদের মতো হাজতের মেঝেতেই ঘুমাতে হয় তাদেরকে। নির্ধারিত স্বাভাবিক খাবার দেওয়া হয় তাদের।

 

নিউমার্কেট থানা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে গত ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। তাদের একজন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সবুজ আলী (২৬) এবং অন্যজন হকার মো. শাহজাহান (২৬)। এ ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। এর মধ্যে শাহজাহান হত্যার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নিহতের ভাই নুরনবী অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সেদিন সংঘর্ষের সময় সবুজ মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত পান। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিকেল সোয়া ৫টার দিকে সবুজকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনার পর ছাত্রলীগ সবুজকে তাদের কর্মী বলে দাবি করে। পরের দিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তার জানাজাও পড়ানো হয়। এতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও অংশ নেন।

পরে অবশ্য নূরনবী বলেছিলেন যে তার ভাই সবুজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। মামলার এজাহারেও ছাত্রলীগের সঙ্গে সবুজের সম্পৃক্ততার বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেননি তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সালমান এফ রহমান ঢাকা-১ আসন থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হন। পরে তাকে নিজের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আইনজীবী আনিসুল হক ২০১৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা) থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওইবারই তাকে আইনমন্ত্রী করা হয়। এরপর থেকে তিনি আইনমন্ত্রীর পদে ছিলেন।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, মন্ত্রী ও এমপিরা গা ঢাকা দেন।

আরও পড়ুন: নৌপথে পালানোর সময় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক গ্রেপ্তার

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর