রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১১ আগস্ট, ২০২৪ ১১:০৪ : পূর্বাহ্ণ
দীর্ঘ ২৬ বছর পর চট্টগ্রাম কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন র্যাব-পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী নাছির উদ্দিন চৌধুরী। যিনি শিবির নাছির হিসেবে চট্টগ্রামে পরিচিত।
আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। মুক্তি পাওয়ার পর ফটিকছড়ির গ্রামের বাড়িতে যান তিনি।
জানা গেছে, নাছিরের বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৩৬টি মামলা ছিল। এর মধ্যে ৩১ মামলায় খালাস পেয়েছেন তিনি। দুটি মামলায় তার সাজা হয়। সেই দুই মামলায় সাজাভোগের মেয়াদ শেষ হয়েছে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ফটিকছড়ির তিনটি হত্যা মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে দুটি মামলায় আগে থেকে জামিনে ছিলেন। সর্বশেষ আজ জামিন পান আরেকটিতে।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন বলেন, তিনটি মামলায় জামিনের কাগজ কারাগারে এসে পৌঁছানোর পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
একসময় ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় তিনি ‘শিবির নাছির’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন। নব্বইয়ের দশকে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় ত্রাস সৃষ্টি করে দীর্ঘদিন আলোচনায় ছিলেন নাছির।
১৯৯৮ সালের ৬ এপ্রিল চট্টগ্রাম কলেজ হোস্টেলের ছাত্রাবাস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
কারা সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালের ৯ এপ্রিল থেকে কারাগারে ছিলেন নাছির। দীর্ঘ ২৬ বছর পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
আদালত সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর নাছিরের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রাবাসে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় রায় হয়। এতে তার পাঁচ বছরের সাজা হয়েছিল।
এর আগে ২০০৮ সালে অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়। ২০১৫ সালের ২৪ মার্চ চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জমির উদ্দিন হত্যা মামলায় খালাস পান নাছির। ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর জমিরকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরি ও হাটহাজারীর তিন খুনের মামলায় খালাস পান নাছির। ২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রামের জামাল খান রোডে অধ্যক্ষ মুহুরির বাসায় ঢুকে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে। এভাবে ৩১টি মামলায় খালাস পান নাছির।
প্রচার আছে, বেশির ভাগ মামলায় জামিন হয়ে যাওয়ায় গত কয়েকবছরে তার কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তবে র্যাব ও পুলিশের ‘ক্রস ফায়ারের’ ভয়ে নাছির তার বিরুদ্ধে থাকা বাকি মামলাগুলোতে জামিনের আবেদন করতেন না। ২০২২ সালে ‘ক্রস ফায়ার’ বন্ধ হলে তিনি মামলাগুলোতে জামিনের আবেদন করেন। তবে আদালত সেগুলো নামঞ্জুর করেছিল।
নাছিরের আইনজীবী মনজুর আহমেদ আনসারী বলেন, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে নাছিরকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। তাই খালাস পেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: কলকাতায় সিআইডির হাতে ধরা পড়লো চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যাক্সন