রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১১ আগস্ট, ২০২৪ ৮:১৫ : অপরাহ্ণ
রাজধানীতে যানজট একটি নিয়মিত ব্যাপার। তবে এবার ঢাকার রাস্তায় দেখা গেলো অন্যরকম চিত্র। গাড়িবহরসহ যানজটে আটকে থাকতে দেখা গেলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গাড়িবহর।
সাধারণত সরকারপ্রধানরা চলাচলের সময় ভিভিআইপি প্রটোকল নিয়ে চলেন। কড়া আশেপাশের এলাকায় থাকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর আগে বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধানকে এভাবে যানজটের মধ্যে রাস্তায় আটকে থাকতে দেখা যায়নি।
আজ রোববার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, আজ রোববার ড. ইউনূসের গাড়িবহন রাজধানীর হ্যান্ডবল স্টেডিয়াম সংলগ্ন বক চত্বর এলাকা থাকা অবস্থায় ভিডিওটি করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, ড. ইউনুসের গাড়িবহর যানজটে আটকে আছে। ব্যস্ত সড়কে যানজটের কারণে কয়েক মিনিট বসেছিলেন তিনি।
তখন তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রটোকলে নিয়োজিত থাকা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যরা যানজটের মধ্যে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ান।
এ সময় চারপাশের উৎসুক জনতাকে লক্ষ্য করে এসএসএফ সদস্যদের বলতে শোনা যায়, আপনারা সবাই রাস্তার ধারেই দাঁড়িয়ে থাকুন। নিরাপদ দূরত্বে থাকুন। রাস্তা থেকে দূরে দাঁড়ান। কোনো গাড়ি ভেতরে ঢোকাবেন না। বাম পাশের রিকশা ডান পাশের লেনে ঢোকাবেন না। কেউ রাস্তা ক্রস করার চেষ্টা করবেন না।
বাংলাদেশের প্রশাসনিক নিরাপত্তা প্রটোকল বিধি অনুসারে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর চলাচলের সময় সড়কের এক পাশ খালি করে চলাচলের বিধান রয়েছে। তাদের চলাচলের ১৫ মিনিট আগে থেকেই নির্দিষ্ট সড়কটির একপাশ ফাঁকা করে সেখানে জনসাধারণের চলাচল বন্ধ করে রাখার নিয়ম অনুসরণ করা হয়।
গত ৮ আগস্ট রাতে শপথ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ১৩ উপদেষ্টা। এরপর তাদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/দপ্তর বণ্টন করে দেওয়া হয়। এরমধ্যে ২৭টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাত্র ২২ দিনের বিক্ষোভে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের।
গত ৩ আগস্ট ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লাখো মানুষের সমাবেশে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে সরকার পতনের এক দফা দাবি ঘোষণা করা হয়।
পরদিন ৪ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে ছাত্র-জনতাকে প্রতিরোধ করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্র নিয়ে মাঠে নামে। এ দিন সারাদেশে ১৪ পুলিশ, শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতাকর্মীসহ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারায়।
এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন ঘেরাও করতে ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেদিন রাস্তায় নেমে আসেন লাখো মানুষ। শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে পতন হয় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের।
ওই দিন বেলা আড়াইটার দিকে শেখ হাসিনা গণভবন থেকে হেলিকপ্টারে করে বঙ্গভবনে যান। সেখানে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এরপর বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটে। এরপর বদলে যেতে শুরু করে দেশের সার্বিক চিত্র।
গত ৬ আগস্ট দুপুরে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।
আরও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা কে কোন দপ্তর পেলেন
লাশের মিছিল না দেখতে পদত্যাগ করেছি: শেখ হাসিনা
জয়-আরাফাতের জুডিশিয়াল ক্যু করার ‘ষড়যন্ত্র ফাঁস’