শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটামের মুখে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত প্রধান বিচারপতির

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আল্টিমেটামের মুখে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। এ বিষয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আজ সন্ধ্যার মধ্যে পদত্যাগ করবেন।

আজ শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

এর আগে সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্যদের দুপুর ১টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন। পরে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এসে জড়ো হতে থাকে। সেখানে তারা বিভিন্ন রকম স্লোগান দেওয়া শুরু করে।

এসময় শিক্ষার্থীদের ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘দফা এক দাবি এক, বিচারপতির পদত্যাগ’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘শেখ হাসিনার দালালি, চলবে না চলবে না’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিরা দুপুর ১টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে তার পরিণতি হবে শেখ হাসিনার মতো। আমরা প্রধান বিচারপতিসহ দলবাজ বিচারপতিদের বাসভবন ঘেরাও করে পদত্যাগে বাধ্য করবো। দলবাজ বিচারপতিদের সরিয়ে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিবাদের মূল উৎপাটন করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার যে গণবিপ্লব সংঘটিত হয়েছে সেটাকে বিতর্কিত করার নানা প্রচেষ্টা চলছে। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্যু করার প্রচেষ্টা দেখেছি। মিলিটারি ক্যু, এডমিনিস্ট্রেটিভ ক্যু এবং আজকে জুডিশিয়ারি ক্যু করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। আমরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চেয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, সেই বিচারপতি অন্যান্য বিচারপতিদের নিয়ে এক ধরনের ডিজিটাল ক্যু করার চেষ্টা করেছে। ছাত্র-জনতা এই প্রচেষ্টাকে শক্ত হাতে প্রতিহত করবে।’

ছাত্র-জনতার উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা রাজপথ দখল করুন। আপনাদের পার্শ্ববর্তী জেলা কোর্ট, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও করুন। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিরা পদত্যাগ না করছে, জুডিশিয়ারি ক্যু করার ষড়যন্ত্র যতক্ষণ না তারা প্রত্যাহার করছেন ততক্ষণ পর্যন্ত ছাত্র-জনতা রাজপথে থাকবে।’

এদিকে সকালে সব বিচারপতির অংশগ্রহণে প্রধান বিচারপতির ডাকা সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। জানা যায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে আদালত পরিচালনা করা যায় ও বিবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য সকাল সাড়ে ১০ টায় ফুলকোর্ট সভা ডেকেছিলেন প্রধান বিচারপতি।

এর আগে বিচারপতিকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যায়িত করে তার পদত্যাগ দাবি ও ফুলকোর্ট সভা বন্ধের আল্টিমেটাম দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।

আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম, সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও