রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :৩০ জুলাই, ২০২৪ ৪:৫১ : অপরাহ্ণ
জামায়াতে ইসলামী ও দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত সরকারের ইস্যু পরিবর্তনের একটি প্রজেক্ট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘সরকার একের পর এক ইস্যু তৈরি করে ঘটনা ধামাচাপা দেয়। সব রাজনৈতিক দলের রাজনীতি করার অধিকার আছে। জনগণ নির্ধারণ করবে সে কোন দলের রাজনীতিতে সমর্থন করবে। দেশে গণতন্ত্র নেই, তাই এ ধরণের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘বিরোধী নেতাকর্মীদের রিমান্ডে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছেন না নুরুল হক নুর, টুকু ও আমিনুলরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদের সমস্ত শরীরে আঘাতের চিহ্ন। শিশু-কিশোরদের আটক করতেও দ্বিধা করে না তারা। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপনকে হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়েছে। এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জুকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গতকালও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা, লাঠিচার্জ, গ্রেপ্তার, নির্যাতন চালিয়েছে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভেও সরকার পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ন্যক্কারজনকভাবে বাধা দিয়েছে এবং হামলা চালিয়ে লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে শতাধিক নিরীহ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে।’
আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে নাটক সাজানো হয়েছে। নাহিদের পায়ে খবরের কাগজ রেখে বিবৃতি পড়ানো দেখেই বোঝা যায় নির্যাতনের চিত্র। সমন্বয়কদের অভিভাবকদের ডেকে খাবার খাওয়ানোর নাটক করা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ডিবি কার্যালয়ের কাজ কি আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করা? তারা (ডিবি) মশকরা শুরু করেছে। এমন মশকরা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সঙ্গেও হয়েছিল। কোনো দলের না হয়ে, প্রজাতন্ত্রর কর্মচারী হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর কাজ করা উচিত।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জনগণের আন্দোলনকে কেউ কোনোদিন রুখে দিতে পারেনি। ছাত্রদের প্রতি স্যালুট, যারা পথে নেমে এসে রক্ত দিয়েছে। তবে সরকার মোড়লদের মতো ছাত্রদের হত্যা করে তাদের পরিবারকে টাকা তুলে দেয়।’
আওয়ামী লীগ এদেশে জঙ্গিবাদের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো জবাবদিহিতা আর বৈধতা নেই। সরকার ব্লকরেড আর গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চাইছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহার, সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে রাজনীতিকে উন্মুক্ত করা, নিষ্ঠুর দমন নিপীড়ন বন্ধ, গ্রেপ্তার নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করছি। রাজনৈতিক সংকট সমাধানে রাজনৈতিক উদ্যোগ প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন:
জামায়াত-শিবিরকে কালকের মধ্যে নিষিদ্ধ করা হবে: আইনমন্ত্রী
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হচ্ছে, ১৪ দলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত