রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৭ জুলাই, ২০২৪ ১১:১৭ : পূর্বাহ্ণ
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা, নাশকতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দেশব্যাপী চলছে যৌথ অভিযান-‘ব্লক রেইড’। মহানগর থেকে শুরু করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত, ছাত্রশিবিরসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
দেশজুড়ে সহিংসতার ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টায় রাজধানীসহ আরও কয়েকটি জেলায় কমপক্ষে ৭৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে গত সাত দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীসহ ৫ হাজার ৫২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ঢাকায় বিভিন্ন থানায় সহিংসতা, ভাঙচুর এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা ২০৯টি মামলায় ২ হাজার ৩৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ১৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সারা দেশে গত ৬ দিনে যে পরিমাণ মামলা হয়েছে তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায়। গত বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ডিএমপিতে মামলার সংখ্যা ছিল ২০১টি। আর গ্রেপ্তার ছিল ২ হাজার ২০৯ জন। তবে শুক্রবার আরও ৮টি মামলা হয়েছে। আর গ্রেপ্তার হয়েছে আরও ১৪৮ জন। ডিএমপি’র মামলা বাদে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশের অন্যান্য স্থানে মামলা ছিল ২৯৯টি। আর গ্রেপ্তার ছিল ২ হাজার ২৯১ জন। তবে শুক্রবার মামলা-গ্রেপ্তার দুটিই বেড়েছে।
সর্বশেষ তথ্যমতে, ঢাকার বাইরে ৩৫টির মতো মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারও হয়েছেন কয়েকশ’।
আদালতের নথি অনুযায়ী, গতকাল ৬৭টি মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতাসহ ২১১ জনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।
গত ১৮ জুলাই সেতু ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল ঢাকার একটি আদালত কারাগারে পাঠান।
গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণঅধিকার পরিষদ জানায়, সংগঠনটির সভাপতি নূরকে রিমান্ডে নির্যাতন করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নূরকে যখন আদালতে হাজির করা হয়, তখন তিনি ঠিকমতো হাঁটতে পারছিলেন না। তিনি তার স্ত্রী ও আইনজীবীকে বলেছিলেন যে রিমান্ডে তাকে নির্যাতন ও মারধর করা হয়েছিল।’
এদিকে রামপুরায় বিটিভি ভবন ভাঙচুরের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির প্রচার বিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ বিএনপি ও জামায়াতের ছয় নেতাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপি নেতা কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, আমিনুল হক, এম এ সালাম, মাহমুদুস সালেহীন ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
গতকাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিএমপির গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশিদ জানান, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও শনির আখরায় দুই পুলিশ সদস্যকে হত্যার ঘটনায় ডেমরা থানা শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।
অন্য পাঁচজন হলেন- ইরফান, আবু বকর, রবিউল ইসলাম, সৌরভ মিয়া ও তারেক।
ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার আন্দোলনের ৩ নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ