বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নাহিদকে তুলে নিয়ে নির্যাতন


শরীরে মারের চিহ্ন নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৪ জুলাই, ২০২৪ ৯:৪১ : পূর্বাহ্ণ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলামকে এক বন্ধুর বাসা থেকে সাদাপোশাকের একদল লোক তুলে নিয়ে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে।

গত ১৮ জুলাই এক বার্তায় তাকে গ্রেপ্তার কিংবা গুম করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

এর পরদিন গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) দিবাগত রাত আড়াইটা-তিনটার দিকে রাজধানীর খিলগাঁও নন্দীপাড়ায় এক বন্ধুর বাসা থেকে সাদাপোশাকের ২০-২৫ জন লোক তাকে তুলে নিয়ে যায়।

গত রোববার (২১ জুলাই) ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর পূর্বাচল এলাকায় রাস্তার পাশে অপহরণকারীরা তাকে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে যান। পরে তিনি সেখান থেকে একটি অটোরিকশায় করে রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় নিজের বাসায় যান। এরপর তিনি দুপুরে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি হন।

ওই দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাহিদ ইসলাম একটি সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

হাসপাতালে শয্যাশায়ী নাহিদ ইসলামের বাঁ উরু, দুই বাহু, আর কাঁধে বড় জায়গাজুড়ে রক্ত জমে তামাটে হয়ে গেছে।

নাহিদ ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) তিনি রাজধানীর খিলগাঁও নন্দীপাড়ায় এক বন্ধুর বাসায় ছিলেন। দিবাগত রাত আড়াইটা-তিনটার দিকে সাদাপোশাকের ২০-২৫ জন লোক সে বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় বন্ধুর বাসার লোকজন তাকে ডেকে তুললে তিনি ছাদে চলে যান। আগত একজন ছাদে গিয়ে তার নাম পরিচয় জানতে চান। এই লোকেরা তার ফোন খোঁজেন কিন্তু পাননি। এরপর তাকে নিচে নামিয়ে আনেন।

নাহিদ ইসলাম জানান, বাসার সামনে তিন-চারটি ভারী গাড়ি ছিল। তাকে একটি গাড়িতে তোলা হয়। গাড়িতে তুলেই অপহরণকারীরা কয়েক ভাঁজ কাপড় দিয়ে তার চোখ বেঁধে ফেলে। গাড়িটি প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট চলে। এরপর তাকে একটি ঘরে ঢোকানো হয়।

নাহিদ ইসলাম আরও জানান, সেই ঘরে বেশ কয়েকজন লোক দফায় দফায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একই সময়ে তিনি চার-পাঁচজনের গলা শুনতে পান। গলা বদল হয় কয়েকবার।

সে সময় কী কথা হয়েছিল তা গণমাধ্যমকে বলেননি নাহিদ।

নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। তারা আমাকে লোহার লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। একপর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।’

নাহিদের অনুমান, তিনি ২৪ ঘণ্টার মতো অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন। জ্ঞান ফিরলে দেখেন, বড় রাস্তার পাশে পড়ে আছেন। সাইনবোর্ডে জলসিঁড়ি লেখা দেখে ধারণা করেন, তিনি পূর্বাচল এলাকায় আছেন। এরপর সেখান থেকে একটি অটোরিকশায় বাসায় ফিরেন।

এর আগে গত শনিবার (২০ জুলাই) ছেলের খোঁজে মা মমতাজ নাহার ও বাবা বদরুল ইসলাম সারাদিন রাজধানীর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ের সামনে বসে ছিলেন। সেখানে বদরুল ইসলাম একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ডিবি তার ছেলেকে ধরে নিয়ে এসেছে কিন্তু স্বীকার করছে না।’

আরও পড়ুন: আমাদের গ্রেপ্তার বা গুম করা হতে পারে: নাহিদ ইসলাম

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর