রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৩১ ভাদ্র, ১৪৩১ | ১১ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

সারাদেশে চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, প্রায় যানবাহনশূন্য সড়ক


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১৮ জুলাই, ২০২৪ ১০:০৫ : পূর্বাহ্ণ
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শাটডাউনে রাজধানীর সড়কের চিত্র। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ডাকা সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলছে। এতে রাজধানীর সড়কে যানবাহন একেবারেই কম দেখা গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর উত্তরা, মোহাম্মদপুর, আসাদগেট, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, খামারবাড়ি, আজিমপুর, ফার্মগেট ও কাওরান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সকাল ৮টার দিকে মহাখালী, সাতরাস্তা ও কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মানুষ হেঁটে, রিকশা, সিএনজি বা মোটরসাইকেল দিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। রাস্তায় বিআরটিসিসহ থেমে থেমে দু-একটি বাস চলতে দেখা গেছে। রাস্তায় গণপরিবহন তেমন দেখা যায়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তবে অনেকে গন্তব্যস্থানে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি ও রিকাসায় করে যেতে দেখা গেছে।

রাস্তার মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্ক উপস্থিতি দেখা গেছে।

এদিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ অংশে ব্যারিকেড দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা থেকে কোনো গাড়ি বের হতে পারছে না। এমনকি রিকশা, মোটরসাইকেল, সাইকেলও যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে অনেক গাড়ি আটকা পড়েছে। এর মধ্যে পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যা বেশি। পাশাপাশি দূরপাল্লার বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশাও রয়েছে। অপরপাশে মাতুয়াইল মেডিকেল এলাকায় ব্যারিকেডের কারণে কোনো যানবাহন ঢাকায় ঢুকতে পারছে না। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষেরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। অনেক মানুষকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।

 

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে এ শাটডাউন  কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়।

গতকাল বুধবার রাত পৌনে ৮টায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। শাটডাউনের মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সড়কে কোনো গাড়ি চলবে না বলে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গত ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন-‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এতো ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’

প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা ধরে নিয়েছেন ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ওই দিন মধ্যরাত থেকে আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

এরপর ১৫ জুলাই দুপুর থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ। বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলা সংঘর্ষে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

১৬ জুলাই শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। সকাল ১১টা থেকে রাজধানীর ১৫-২০টি স্থানে একযোগে সড়ক অবরোধ শুরু করেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অবরোধে গোটা রাজধানী অচল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়াসহ দেশের প্রায় সর্বত্র শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে আসে। দুপুরের পর থেকে ঢাকার সায়েন্সল্যাব এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়।। সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৩ জন, ঢাকায় ২ জন এবং রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থী নিহত হন। ১৭ জুলাই রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভারে গুলিতে এক যুবক মারা যান। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে এ পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন: যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, গুলিতে যুবক নিহত

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর