বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ২০ ভাদ্র, ১৪৩১ | ৩০ সফর, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

রক্ত মাড়িয়ে সংলাপ নয়: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১৮ জুলাই, ২০২৪ ৩:৩৯ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংলাপে বসতে সরকার রাজি বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুলাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, ‘রক্ত মাড়িয়ে কোনো সংলাপ নয়।’

আন্দোলনের আরেক অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমও পৃথক স্ট্যাটাসে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ‘একদিকে গুলি আর লাশ, অন্যদিকে সংলাপ ! আমার ভাইয়ের রক্তের উপর দিয়ে কীভাবে সংলাপ হতে পারে?’

এর আগে আজ দুপুরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘আমরা কোটা সংস্কারের পক্ষে। কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে সরকার রাজি আছে। কোটা নিয়ে আদালতে যখন শুনানি হবে, তখন সরকারের পক্ষ থেকে একটা প্রস্তাব দেওয়া হবে।’

শিক্ষার্থীদের চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

উল্লেখ্য, সারাদেশে আজ বৃহস্পতিবার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।

চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গত ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন-‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এতো ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’

প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা ধরে নিয়েছেন ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ওই দিন মধ্যরাত থেকে আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

এরপর ১৫ জুলাই দুপুর থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ। বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলা সংঘর্ষে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

১৬ জুলাই শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। সকাল ১১টা থেকে রাজধানীর ১৫-২০টি স্থানে একযোগে সড়ক অবরোধ শুরু করেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অবরোধে গোটা রাজধানী অচল হয়ে পড়ে।

পাশাপাশি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়াসহ দেশের প্রায় সর্বত্র শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে আসে। দুপুরের পর থেকে ঢাকার সায়েন্সল্যাব এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৩ জন, ঢাকায় ২ জন এবং রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থী নিহত হন। গতকাল বুধবার (১৭ জুলাই) রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভারে গুলিতে এক যুবক মারা যান। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে এ নিয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন: 

শিক্ষার্থীরা যখনই চাইবে সরকার আলোচনায় বসতে রাজি: আইনমন্ত্রী 

উত্তরায় গুলিতে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ শিক্ষার্থী নিহত

কমপ্লিট শাটডাউন: ঢাকার রাজপথ এখন শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে

রামপুরা-বাড্ডা সড়ক রণক্ষেত্র, ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয়ে আগুন

সারাদেশে চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, প্রায় যানবাহনশূন্য সড়ক

ঢাকার সঙ্গে সব জেলার যোগাযোগ বন্ধ, টার্মিনাল থেকে ছাড়ছে না কোনো বাস

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর