বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

সারাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের ফোর-জি সেবা বন্ধ



রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১৮ জুলাই, ২০২৪ ১১:৩৯ : পূর্বাহ্ণ

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে সারাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের ফোর-জি সেবা বন্ধ রয়েছে। মোবাইল ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার পারছেন না বলে অভিযোগ করছেন।

ব্যবহারকারীরা বলছেন, তাদের মোবাইলে ফোর-জি নেটওয়ার্ক কাজ করছে না। ফলে মোবাইল ডিভাইসে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না।

হবিগঞ্জের মোবাইল রিচার্জ বিক্রেতা মো. আলম বলেন, অনেক মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী ডেটা কেনার পরও ফেসবুক ও ইউটিউব ব্যবহার করতে পারছেন বলে জানাচ্ছেন আমাকে।

বিভিন্ন জেলা থেকে আমাদের সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, তারা মোবাইল ডেটা ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ বা ইমেইলের মাধ্যমে প্রতিবেদন জমা দিতে পারছেন না।

এর আগে গতকাল বুধবার গ্রাহকেরা অভিযোগ করেছিলেন, ঢাকার বিভিন্ন স্থানে হঠাৎ মোবাইল ইন্টারনেটের গতি কমে গেছে। ফেসবুক ও মেসেঞ্জারেও প্রবেশ করতে পারছেন না অনেকে। কেউ আবার প্রবেশ করতে পারলেও ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে বার্তা বা ছবি পোস্ট করতে পারছেন না। এমনকি অন্যদের পোস্টে ক্লিক করে বার্তা বা ছবি দেখতে পারছেন না তারা। শুধু তা-ই নয়, ফেসবুকের হালনাগাদ পোস্ট খুঁজে পেতেও সমস্যা হচ্ছে অনেকের।

 

১৬ জুলাই থেকে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোর-জি নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে। তবে, টু-জি নেটওয়ার্ক চালু থাকায় ব্যবহারকারীরা কেবল ভয়েস কল করতে পারছেন।

২০২৪ সালের মে পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১২ কোটি ৭৮ লাখ মোবাইল গ্রাহক রয়েছেন।

উল্লেখ্য, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গত ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন-‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এতো ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’

প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা ধরে নিয়েছেন ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ওই দিন মধ্যরাত থেকে আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

এরপর ১৫ জুলাই দুপুর থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ। বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলা সংঘর্ষে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

১৬ জুলাই শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। সকাল ১১টা থেকে রাজধানীর ১৫-২০টি স্থানে একযোগে সড়ক অবরোধ শুরু করেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অবরোধে গোটা রাজধানী অচল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়াসহ দেশের প্রায় সর্বত্র শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে আসে। দুপুরের পর থেকে ঢাকার সায়েন্সল্যাব এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়।। সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৩ জন, ঢাকায় ২ জন এবং রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থী নিহত হন। ১৭ জুলাই রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভারে গুলিতে এক যুবক মারা যান। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে এ পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন: সারাদেশে চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, প্রায় যানবাহনশূন্য সড়ক

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর