শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

উত্তপ্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষার্থীদের ওপর দু’দফা সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১৭ জুলাই, ২০২৪ ৫:২৪ : অপরাহ্ণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি চত্বরে কোটা সংস্কার দাবিতে নিহতদের গায়েবানা জানাজা ও মোনাজাত শেষে কফিনসহ মিছিল করতে করতে টিএসসির দিকে যাচ্ছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের সামনে ও পেছন থেকে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এরপর মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এতে সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।

আজ বুধবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে।

প্রথমে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গায়েবানা জানাজা পড়ে। এরপর তারা মিছিল নিয়ে ভিসি চত্বরের সামনে যান। সেখানে গায়েবানা জানাজায় ঢাবির বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ শিক্ষার্থী এসে যোগ দেন। সেখানে দ্বিতীয় দফায় জানাজা পড়েন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা কফিন মিছিল নিয়ে টিএসসির দিকে রওনা দিলে তাদের লক্ষ্য করে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল মারেন। এরপর মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত ও মল চত্বরের দিকে অবস্থান করছেন।

শিক্ষার্থীদের ওপর দু’দফা সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ

আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ভিসি আমাদের অভিভাবক। অথচ তার বাসভবনের সামনেই আমাদের দিকে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গত ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এতো ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’

প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা ধরে নিয়েছেন ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে গত রোববার মধ্যরাত থেকে আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

১৪ জুলাই দুপুর থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ। বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলা সংঘর্ষে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাত ১০টার পর আন্দোলনকারীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং সারা দেশের সব পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে তাদের সমর্থনে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে রাজধানীর ১৫-২০টি স্থানে একযোগে সড়ক অবরোধ শুরু করেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অবরোধে গোটা রাজধানী অচল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়াসহ দেশের প্রায় সর্বত্র শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে এসেছেন। দুপুরের পর থেকে ঢাকার সায়েন্সল্যাব এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়।। সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় ৩ জন, ঢাকা কলেজের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে ২ জন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন।

আরও পড়ুন:

টিএসসিতে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ, তুলে নিয়ে গেছে ডাকসু নেতাকে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পালিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল না ছাড়ার সিদ্ধান্ত কোটাবিরোধীদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, সন্ধ্যার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে হল ছাড়ছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর