রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৭ জুলাই, ২০২৪ ৮:৫১ : অপরাহ্ণ
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক হল দখলে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় ছাত্রলীগ অবস্থান করা শাহপরাণ হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, বেশ কিছু রুম দখল করেন তারা। এতে বেশ কিছু রুম থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, চাকু, পিস্তল, রিভালভার ও মদের বোতল উদ্ধার করেন শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার বিকেল ৩টায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গায়েবানা জানাজা ও কফিন কর্মসূচির পরে হল দখল করে নেন তারা।
উদ্ভূত পরিস্থিতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনার পরে এই মুহূর্তে পুরো ক্যাম্পাস শূন্য ছাত্রলীগ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। এমনকি দুপুরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমানও হল ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গত ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন-‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এতো ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’
প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা ধরে নিয়েছেন ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে গত রোববার মধ্যরাত থেকে আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
১৪ জুলাই দুপুর থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ। বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলা সংঘর্ষে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাত ১০টার পর আন্দোলনকারীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং সারা দেশের সব পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে তাদের সমর্থনে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে রাজধানীর ১৫-২০টি স্থানে একযোগে সড়ক অবরোধ শুরু করেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অবরোধে গোটা রাজধানী অচল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়াসহ দেশের প্রায় সর্বত্র শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে এসেছেন। দুপুরের পর থেকে ঢাকার সায়েন্সল্যাব এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়।। সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় ৩ জন, ঢাকা কলেজের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে ২ জন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন।
আরও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পালিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক
টিএসসিতে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ, তুলে নিয়ে গেছে ডাকসু নেতাকে
শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে হল ছাড়ছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা