বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা চট্ট-মেট্টো

চট্টগ্রামে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে নিহত ৩


চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুরে ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় এক যুবককে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১৬ জুলাই, ২০২৪ ৫:০৭ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন-ফারুক ও ওয়াসিম আকরাম। ফারুকের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি ফার্নিচারের দোকানে চাকরি করতেন। ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বাকি একজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের একজন চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী এবং আরেকজন পথচারী অপরজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ’

 

জানা গেছে, বিকেল ৩টা থেকে নগরের মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট এবং ষোলশহর আশপাশের এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু হয়। এতে তিনজন নিহত হন। ষোলশহর শিক্ষা বোর্ড এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মাঝে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলছে। মুরাদপুর অংশে অবস্থান নিয়েছে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা।

গতকাল সোমবার সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিকেল ৩টায় চট্টগ্রামের মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট এবং ষোলশহর আশপাশের এলাকায় জড়ো হন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন। এ সময় দুপক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে চট্টগ্রাম কলেজের এক শিক্ষার্থী ও একজন পথচারী নিহত হন। সংঘর্ষের মধ্যে যুবলীগ- ছাত্রলীগের মিছিল থেকে একজনকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।

ষোলশহর শিক্ষা বোর্ড এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মাঝে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলছে। মুরাদপুর অংশে অবস্থান নিয়েছে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুলাই চীন সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এতো ক্ষোভ কেন? তাদের নাতি-নাতনিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা পাবে?

প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যের জেরে ফুঁসে উঠেন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা। ওই দিন রাতে বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

গতকাল সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের মিছিলে ছাত্রলীগ হামলা চালালে আন্দোলন সংঘাতে রূপ নেয়। গতকাল দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় তাদের ওপর হামলা হয়। এতে অর্ধশতাধিক ছাত্রছাত্রী আহত হন। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ ঘটনার বিচার চেয়ে ও অবৈধ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বিতাড়িত করতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

দুপুর থেকেই দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগসহ বহিরাগতরা। এ সময় হামলার শিকার আহত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে গেলে জরুরি বিভাগে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

আরও পড়ুন: রংপুরে পুলিশের গুলি, আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী নিহত

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর