শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

কোটাবিরোধী আন্দোলন

কাল সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক অবরোধের ডাক


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :৯ জুলাই, ২০২৪ ৭:০৩ : অপরাহ্ণ

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের এক দফা দাবিতে এবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের সড়ক, নৌ ও রেলপথের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকেড’ পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে এ অবরোধের ডাক দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘২০১৮ সালের পরিপত্র যদি ফিরে আসে, সে ক্ষেত্রে কোটা নিয়ে আবার ঝামেলা হতে পারে। তাই, আমরা সরকার ও নির্বাহী বিভাগের কাছে সম্পূর্ণ সমাধান চাই।’

 

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘যদি সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে কমিশন গঠনের মাধ্যমে আমাদের দাবি মেনে নেয়, সে ক্ষেত্রেই আমরা রাজপথ ছেড়ে ক্লাসরুমে ফিরে যাবো।’

বর্তমানে শিক্ষার্থীদের একদফা দাবি হলো- সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে শুধুমাত্র অনগ্রসর গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযুদ্ধার সন্তানদের জন্য সর্বোচ্চ ৫% কোটা রাখতে হবে।

সমন্বয়কারীরা সাংবাদিকদের জানান, আজ দেশের বিভিন্ন জায়গার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গণসংযোগ করেছেন তারা। আদালতের নির্দেশের বাইরেও তারা সরকারের নির্বাহী বিভাগের কাছ থেকে লিখিত আশ্বাস চান কোটা বাতিলের বিষয়ে। এ কারণে তারা বুধবার সকাল-সন্ধ্যা ব্লকেড পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গত কয়েকদিন অর্ধদিবস অবরোধের পর আজ গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এই কর্মসূচি শেষে আবার অবরোধের ঘোষণা দিলেন তারা।

আরও পড়ুন: রাজপথে চেঁচামেচি করে কোটা বাতিল করা যাবে না, শিক্ষার্থীদের আইনমন্ত্রী

উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল। ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন তখনকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

২০২১ সালে সেই পরিপত্রের ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলে’র অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন। এর প্রতিবাদে গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর