রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :৮ জুলাই, ২০২৪ ৬:২৪ : অপরাহ্ণ
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন হওয়ায় তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন করা উচিত না বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টে প্রাঙ্গণে নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আদালত (হাইকোর্ট) একটি রায় দিয়েছেন। এমনকি সেই (হাইকোর্ট) রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে গেছে সরকার। আমি মনে করি, এই মুহূর্তে রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা তাদের (শিক্ষার্থীদের) উচিত হবে না। আমি বলব যে বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে এবং এটি নিয়ে রাস্তায় নামা উচিত নয়। এ অবস্থায় তাদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ করব। আমি জানি না কেন তারা আন্দোলন করছে। আমি মনে করি, আন্দোলন না করাই ভালো।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বহাল রাখা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তে আদালত কতটুকু হস্তক্ষেপ করতে পারে, সে বিষয়ে আমরা আমাদের যুক্তিতর্ক আদালতে উপস্থাপন করেছি।’
আমিন উদ্দিন বলেন, ‘হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর তার কার্যালয় পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘বিষয়টি (হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের আবেদন) বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে ওঠার কথা রয়েছে। বুধবারের মধ্যে হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পেলে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে আপিল করবো।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।
ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন তখনকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
২০২১ সালে সেই পরিপত্রের ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলে’র অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।
গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন। এর প্রতিবাদে গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা।
আরও পড়ুন: কোটাবিরোধী আন্দোলন: রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ‘বাংলা ব্লকেড’