রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :৫ জুলাই, ২০২৪ ৮:১৯ : অপরাহ্ণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অনেক ঝড়-ঝাপটা, বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ওপর প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর খবরদারি করার মানসিকতা বদলে দিয়েছে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণত প্রকল্পের সমাপনী কোনো অনুষ্ঠান হয় না। তবে পদ্মা সেতু নির্মাণে অনেক কাঠখড় পোহাতে হয়েছে। বিশেষ করে পদ্মার দুই পাড়ের যারা জমি দান করেছেন এবং সেতু নির্মাণের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট ছিলেন, তাদের কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যই এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশবাসী পাশে ছিল বলেই জ্ঞানীগুণীদের বাঁধা সত্ত্বেও সব অতিক্রম করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পেরেছি। সবাই না করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই জটিল স্থাপনা আমরা নির্মাণ করতে পেরেছি।’
তৎকালীন সময়ে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট যেদিন দায়িত্ব থেকে চলে যান, সেদিনই পদ্মা সেতুর টাকাটা বন্ধ করে দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এজন্য হিলারি ক্লিনটনের নির্দেশ ছিল। টাকা বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য দাতা সংস্থাও বন্ধ করে দিলো। আমি অনেক দেশের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। সবাই মনে করেছিল, বিশ্বব্যাংকের টাকা ছাড়া এই সেতু করাই যাবে না। আমি বললাম কেন যাবে না? একমাত্র মালয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট বললেন, আপনার সেতুটা আমি করে দেবো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মালয়েশিয়া সরকার মোটামুটি একটা প্ল্যানও দিলো। মুশকিল হয়ে গেল আমার দেশে। কেউ বলছে না, বিশ্বব্যাংক ছাড়া আমরা করতে পারবো। হ্যাঁ, আমার জনগণ আছে, বাংলাদেশের মানুষ আছে। দেশে যারা জ্ঞানীগুণী প্রত্যেকে বলে এটা করা সম্ভব নয়। আমি বলেছি, আমরা করবো। ১৭ কোটি মানুষ, টাকা এসে যাবে। আমরা তো একদিনে সব টাকা খরচ করব না। আমরা আস্তে আস্তে করবো।’
ড. ইউনূসের নাম উল্লেখ না করে তার দিকে ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বয়সসীমা পেরিয়ে গেলেও অবৈধভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে থাকা নিয়ে ষড়যন্ত্র করে তিনি বিশ্বব্যাংকের টাকা আটকে দিয়েছিলেন। এতো নামিদামি নোবেল জয়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদের জন্য কেন লালায়িত, সেটার উত্তর পেলাম না। আমাদের হুমকি দেয়া হলো ড. ইউনূসের এমডির পদ না থাকলে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাবে। হিলারি ক্লিনটন ফোন করেছিলেন। একবার নয় দুইবার। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি এলো। অনেকেই এলো। আমি শুধু জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে একটা কথা বলেন, এই এমডি পদে কী মধু আছে?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাবা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) কখনো কারও কাছে মাথা নত করেনি, আমিও কারও কাছে মাথা নত করি না। ক্ষমতায় থাকি আর না থাকি, দেশের সম্পত্তি বিক্রি করে ক্ষমতায় থাকার মানুষ আমি না।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠান, ব্যয় হবে ৫ কোটির ওপরে