সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগ মোড় থেকে সরে গেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ঘোষিত চার দফা দাবিতে শুক্রবার অনলাইন ও অফলাইনে গণসংযোগ করা হবে। শনিবার বিকেল ৩টায় সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে বিক্ষোভ মিছিল এবং রোববার সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্র ধর্মঘট পালন করা হবে।
আন্দোলনের আরেক সমন্বয়কারী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছেন সকল বৈষম্য দূর করার জন্য। এই কোটার মাধ্যমে মেধাবীদের সঙ্গে চরম বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এই কোটা অবিলম্বে বাতিল করে সংবিধান ঘোষিত সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে। এই কোটা পদ্ধতির ফলে চাষার ছেলে চাষা, রাজমিস্ত্রীর ছেলে রাজমিস্ত্রী, মজুরের ছেলে মজুর থেকে যাবে। আমরা একই প্রশ্নে পরীক্ষা দেবো, একই প্রশ্নে লিখবো, একই প্রশ্নে ভাইভার মুখোমুখি হবো। কিন্তু তারা কোটা সুবিধার কারণে একাই এক শ সুবিধা পাবে, সেটা মেনে নেবো না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আজকের মতো অবরোধ কর্মসূচি শেষ করছি। আজকে আমরা ফিরে যাচ্ছি কিন্তু আগামীতে আরও বেশি শক্তি সঞ্চয় করে রাজপথে নামবো।’
এর আগে আজ সকালে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগে এসে জড়ো হন।
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের রায় আপাতত বহাল
দুপুর ১২টা থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। সন্ধ্যা ৬টায় অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। দীর্ঘ সময় সড়ক অবরোধ থাকার কারণে রাজধানীর শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়া শুরু করে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল থাকায় ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা, উত্তাল শাহবাগ