রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ

আজও শাহবাগ অবরোধ শিক্ষার্থীদের, যান চলাচল বন্ধ


আজ বিকেল পৌনে ৪টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়। তবে আগেই সেখানে অবস্থান নিয়ে রেখেছিল পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৩ জুলাই, ২০২৪ ৫:০৭ : অপরাহ্ণ

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ৪ দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী।

আজ বুধবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগে আসেন। এরপর তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। তবে বিক্ষোভকারীরা শাহবাগে আসার আগেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়।

এর আগে কোটা বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল থেকে আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজস্ব হলের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন।

ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণের সময়ে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন-‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার”, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, “কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই।’

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে বাংলামোটর-শাহবাগ, শাহবাগ-সায়েন্স ল্যাব এবং শাহবাগ-কাকরাইলের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হাসিব আল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি হাইকোর্ট ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। এর বিরুদ্ধে সরকার একটি রিট পিটিশনও করেছে। কোটা নিয়ে একটি রায় আছে। আগামীকাল হাইকোর্টের রায়ের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। যদি আবার কোটা পদ্ধতি ফেরত আসে তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাবো।’

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ৪ দাবিতে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলেও শিক্ষার্থীরা এক ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।

আরও পড়ুন: কোটা বাতিলের দাবিতে এক ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ

বিক্ষোভকারীদের চারটি দাবি হলো-

১। ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।

২। ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকুরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।

৩। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।

৪। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডের সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের ৩০ শতাংশ কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি এ সিদ্ধান্তকে হাইকোর্ট গত ৫ জুন অবৈধ ঘোষণা করে।

এরপর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। পরে ৯ জুন সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে সরকার।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর