রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৪ জুন, ২০২৪ ৪:৪৪ : অপরাহ্ণ
বিভিন্ন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৬০ আসামির ফাঁসি কার্যকর করা আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
আজ সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির তেজগাঁও জোনের শের-ই-বাংলা নগর থানার এসআই মশিউর আজম বলেন, ‘সাভারের হেমায়েতপুরের জাদুরচর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন শাহজাহান। রোববার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বুকে ব্যথা শুরু হলে তাকে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।’
দীর্ঘ ৪৪ বছর কারাগারে বন্দি ছিলেন জল্লাদ শাহজাহান। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো ব্যক্তির সবচেয়ে বেশি দিন কারাভোগের রেকর্ড এটি।
১৯৭৯ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ৩৬টি মামলায় তার ১৪৩ বছরের সাজা হয়। পরে ৮৭ বছর মাফ করে তাকে ৫৬ বছরের জন্য জেল দেয়া হয়। ফাঁসি কার্যকর ও সশ্রম কারাদণ্ডের সুবিধার কারণে সেই সাজা ৪৩ বছরে নেমে আসে। সাজার মেয়াদ কমানোর বাসনায় একের পর এক অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে কয়েদি থেকে জল্লাদ বনে যান শাহজাহান।
জল্লাদ শাহজাহান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ ঘাতক, ৬ জন যুদ্ধাপরাধী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামী খুকু মনির, ডেইজি হত্যা মামলার আসামী হাসানসহ বাংলাদেশের আলোচিত ২৬ জনকে জনের ফাঁসি দিয়েছেন।
দুটি মামলায় ৫০০০ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাস করে অতিরিক্ত এক বছর জেল খেটে ৪৪ বছর পর মুক্ত আকাশে শ্বাস ফেলার সুযোগ পান জল্লাদ শাহজাহান। গত বছরের ১৮ জুন তিনি মুক্তি পান।
কারামুক্তির পর এক তরুণীকে বিয়ে করেন জল্লাদ শাহজাহান। কিন্তু সেই সংসার টেকেনি। এ নিয়ে আইনি জটিলতায়ও পড়েন।
‘জল্লাদ’ শাহজাহানের পুরো নাম শাহজাহান ভূঁইয়া। নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের মৃত হাছেন আলীর ছেলে তিনি। তার মায়ের নাম মেহের। তিন বোনের মধ্যে বর্তমানে এক বোন বেঁচে আছেন।
আরও পড়ুন: ২৬ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানো জল্লাদ শাহজাহান মুক্তি পেয়েছেন