স্পোর্টস ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৪ জুন, ২০২৪ ১২:১৫ : পূর্বাহ্ণ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে নেদারল্যান্ডসকে হারাতেই হতো বাংলাদেশকে। একই সমীকরণের সামনে ছিল ডাচরাও। এমন ম্যাচে সুযোগ হাতছাড়া করেনি বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের ব্যাটিং নৈপুন্যের পর বোলারদের দাপটে ডাচদের বিপক্ষে দারুণ জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ২৫ রানের জয়ে বিশ্বকাপের সুপার এইটের আশা বাঁচিয়ে রাখলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
এই নিয়ে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে বাংলাদেশ। এই গ্রুপ থেকে এরই মধ্যে পরের ধাপ নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার দ্বিতীয় দল হিসেবে বাংলাদেশও তাদের অবস্থান জানান দিল।
আজ বৃহস্পতিবার কিংসটাউনের আর্নোস ভেল স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে থেমেছে নেদারল্যান্ডস।
১৬০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বেশ সতর্ক শুরু করে নেদারল্যান্ডস। প্রথম চার ওভারে ডাচদের ওপেনিং জুটি ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। পঞ্চম ওভারে এসে অবশেষে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। ডানহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারি উড়িয়ে মারতে গিয়ে পয়েন্টে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে সহজ ক্যাচ দেন ডাচ ওপেনার মাইকেল লেভিট। ১৮ রানে ভাঙে তার প্রতিরোধ, ২২ রানে প্রথম উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস।
পরের ওভারে ডাচদের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন তানজিম সাকিব। ম্যাক্স ও’ডাউডকে কট এন্ড বোল্ড করে ১২ রানে নিজের শিকার বানান তানজিম। পাওয়ার প্লেতে এই দুটি উইকেট হারিয়ে নেদারল্যান্ডস তোলে ৩৬ রান।
এরপর অবশ্য প্রতিরোধ গড়ে তোলেন সাইব্রান্ড এঙ্গেলব্রেশট ও ভিক্রাম সিং। দশম ওভারে এসে এই জুটি ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। অভিজ্ঞ এই স্পিনারের বল বাইরে এসে খেলতে গিয়ে কিপার লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দেন ভিক্রাম। ১৬ বলে তিন ছক্কায় ২৬ রান করে ফিরে যান ডাচ ব্যাটার।
চতুর্থ উইকেটে আবারও ভয় জাগায় নেদারল্যান্ডস। এবার স্কট এডওয়ার্ডস ও এঙ্গেলব্রেশটের ৪২ রানে জুটিতে বাংলাদেশকে হুঙ্কার জানায় নেদারল্যান্ডস। ১৫তম ওভারে রিশাদ এসে থামান এই জুটিকে। তিনি ফিরিয়ে দেন এঙ্গেলব্রেশটকে। ২২ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটারকে ফিরিয়েই মূলত খেলায় ফেরে বাংলাদেশ।
পরের প্রেক্ষাপট পুরোই বাংলাদেশের। মুস্তাফিজ-রিশাদ মিলে ধরিসে দেন ডাচদের লোয়ার অর্ডার। একের পর এক উইকেট হারানোর মাঝে জয়ের দুয়ারে আর যেতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। শেষ পর্যন্ত ১৩৪ রানে থামে তাদের ইনিংস।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৩৩ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন রিশাদ হোসেন। ৩০ রান খরচায় তাসকিন আহমেদের শিকার দুটি। একটি করে নেন মাহমুদউল্লাহ, তানজিম ও মুস্তাফিজ।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আরিয়ান দত্তকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শান্ত। ৩ বলে ১ রান করেন টাইগার অধিনায়ক। শান্তর বিদায়ের পর উইকেটে এসে দ্রুতই ফেরেন আরেক টপঅর্ডার ব্যাটার লিটন দাস। এই উইকেটও তুলে নেন আরিয়ান। নিজের খেলা দ্বিতীয় বলে আরিয়ানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন। ২ বলে ১ রান করেন তিনি।
দলীয় ২৩ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দায়িত্ব কাঁধে তুলে সাকিব এবং তানজিদ তামিম। ৩২ বলে ৪৮ রানের দুর্দান্ত এই জুটি ভাঙে দলীয় ৭১ রানে তানজিদ তামিম ৩৫ রান করে সাজঘরে ফেরায়। নবম ওভারে ফন মিকেরেনের বলে ক্যাচ হয়ে ফেরেন তানজিদ। এরপর বাইশগজে ব্যাট হাতে আসেন তাওহিদ হৃদয়।
তাকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন সাকিব। তবে ব্যক্তিগত ৯ রানে হৃদয় আউট হলে ভাঙে এই জুটি, তখন দলীয় রান ৮৯। এরপর মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে এগুতে থাকেন সাকিব। একই সঙ্গে নিজের অর্ধশতকও তুলে নেন টাইগার অলরাউন্ডার।
৫ম উইকেটে রিয়াদ ও সাকিব ৪১ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১৩০ রানে ২১ বলে ২৫ করে আউট হন রিয়াদ।
শেষ দিকে জাকের আলীর অপরাজিত ১৪ রানের ক্যামিও ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব।
নেদারল্যান্ডসের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ দুই উইকেট নেন আরিয়ান দত্ত ও পল ফন মিকিরেন।