রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৯ জুন, ২০২৪ ৩:১৪ : অপরাহ্ণ
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে জুন পর্যন্ত আল্টিমেটাম বেঁধে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময়ের মধ্যে কোটা বাতিল করা না হলে লাগাতার আন্দোলন ও প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা এ হুঁশিয়ারি দেন।
আজ রোববার তৃতীয় দিনের মতো কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা এ ঘোষণা দেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হন। শিক্ষার্থীরা ‘দেশ নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘মেধাবীরা মুক্তি পাক, কোটা নিপাত যাক’ প্রভৃতি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। সমাবেশ শেষে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন তারা।
সমাবেশে শিক্ষার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি কোটার পক্ষে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দেখলাম। তিনি শিক্ষার্থীদের মন্ত্রী নন। যারা কোটার পক্ষে তাদের উদ্দেশে বলছি, নিজেদের অক্ষমতা ঢাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ব্যবহার করবেন না।’
আরেক ছাত্রী তামান্না আক্তার বলেন, ‘মেধাবীদের পিষ্ট করা হচ্ছে। আমি নারী হয়ে বলছি, আমার কোনো কোটার প্রয়োজন নেই।’
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফায়েজ বলেন, ‘ছাত্রসমাজ মেধার ভিত্তিতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিল। ২০২৪ সালে আমাদের সে স্বপ্ন ধূলিসাৎ করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা হাইকোর্টের রায় মানি না।’
লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মিরাজুল ইসলাম সোহান বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা সাম্য নিশ্চিত করতে চেয়েছিল। এই বাংলাদেশে আবার কোটা কেন? কোটা প্রার্থীদের মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত নয়।’
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল থাকবে।
সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে সরকার। এমন পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বুধবার রায়ে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আজ রোববার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ সাইফুল আলম।