রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৫ জুন, ২০২৪ ১০:৪১ : পূর্বাহ্ণ
ভারতের সাম্প্রতিকতম ইতিহাসে এবারের লোকসভা নির্বাচনকে ব্যতিক্রমই বলা চলে। জয় পেয়েও বিজেপি যেন পরাজিত। আর হেরে গিয়েও বিরোধী দল কংগ্রেস করছে উল্লাস।
কট্টর হিন্দুত্ববাদ আর তথাকথিত ‘মোদি ম্যাজিককে’ কাজে লাগিয়ে টানা এক দশক ভারতে একদলীয় শাসন চর্চা করে আসছে বিজেপি। তবে ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের ফলে এবারে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে মোদির দল।
ভারতে চারশর বেশি আসন পাওয়ার স্লোগান দেওয়া বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদির এনডিএ জোট এবার লোকসভা নির্বাচনে তিনশর লক্ষ্যই ছুঁতে পারেনি। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বুথফেরত জরিপের পূর্বাভাসকে মিথ্যা প্রমাণ করে ২৯৬ আসনে আটকে গেছে দেশটির কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা এনডিএ জোট।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট ‘এনডিএ’ ২৯৩টি আসন পেয়েছে। অপরদিকে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট ‘ইনডিয়া’ পেয়েছে ২৩৩টি আসন।
এর মধ্যে বিজেপি একা পেয়েছে ২৪০টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছে ৯৯টি আসন। সমাজবাদী দল পেয়েছে ৩৭টি আসন। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২৯টি আসন। আর বাকি আসনগুলো পেয়েছে অন্যান্য দলগুলো।
কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট জয় না পেলেও বিজেপি এবার পায়নি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা। এ ক্ষেত্রে সরকার গঠন করতে হবে শরিক দলগুলো নিয়ে। এ ফলাফলকে মোদির জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপি একাই ৩০২টি আসনে জিতেছিল। এর মাধ্যমে তারা দেশটিকে এককভাবে সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করেছিল। তবে এবার আর এমন ম্যাজিক দেখাতে পারেনি হিন্দুত্ববাদী দলটি।
‘এনডিএ’ জোটে থাকা দলগুলোকে নিয়ে মোদি সরকার গঠন করতে পারবে। তবে চন্দ্রবাবু নাইড়ু ও নীতীশ কুমারের সঙ্গে কংগ্রেসের যোগাযোগের খবর পাওয়া গেছে। তারা যদি বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে কংগ্রেসে যোগ দেয় তাহলে কংগ্রেসও সরকার গঠন করতে পারবে।
বিজেপির এই জোট শরিকদের বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোটও। আর এ কাজের দায়িত্ব পড়েছে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, মহারাষ্ট্রের এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাঁধে।
জানা যায়, নীতিশ কুমারকে উপপ্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্স। বলা হচ্ছে, বিজেপির চেয়ে কংগ্রেসের কাছ থেকে বেশি সুযোগ সুবিধার নিশ্চয়তা পেলে ভোল পাল্টাতে পারেন প্রবীণ দুই রাজনীতিবিদ। কেননা ঘন ঘন সঙ্গী বদলের অভ্যাস তাদের বেশ পুরনো।
অপরদিকে, শরিকদের ওপর নির্ভর করে বা তাদের ভরসায় রাজ্য বা কেন্দ্রে কোথাও সরকার চালানোয় অভ্যস্ত নন নরেন্দ্র মোদি। নতুন এই সমীকরণের সঙ্গে তাই কতটা খাপ খাওয়াতে পারবেন মোদি, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়।
কোনো দল যদি এককভাবে সরকার গঠন করতে হলে লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে ২৭২টি আসনে জয় পেতে হয়। এ সংখ্যা কোনো দলই পায়নি। তাই এবার জোট সরকার গঠিত হবে।
আরও পড়ুন: