রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন
প্রকাশের সময় : ৩১ মে ২০২৪, ৯:০৯ অপরাহ্ণ
কর্মী ভিসায় মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সময় শেষ হচ্ছে আজ শুক্রবার মধ্যরাতে। ভিসা পাওয়া শ্রমিকদের আজকের মধ্যে দেশটিতে পৌঁছতে হবে। এ কারণে শেষ দিনে ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দরে শ্রমিকদের উপচেপড়া ভিড়। কিন্তু এখনো ফ্লাইটের টিকিট পাননি প্রায় ৩১ হাজার শ্রমিক। ফলে তাদের মালয়েশিয়ায় যাওয়া অনেকটাই অনিশ্চিত।
বিমানবন্দরে ঘুরে দেখা গেছে, ফ্লাইটের অপেক্ষায় সেখানে মালয়েশিয়াগামী হাজারো যাত্রী মানবেতর সময় পার করছেন।
ভুক্তভোগী শ্রমিকরা জানান, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির দালালদের কথায় টিকিট ছাড়াই শুক্রবার ভোর থেকে তারা অপেক্ষা করছেন বিমানবন্দরে।
বিমানবন্দরের বহির্গমন ড্রাইভওয়েতে ফ্লাইটের অপেক্ষায় থাকা যাত্রী জহিরুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর বামনী এলাকার জেজি আল এজেন্সির দালাল হারুনের কথায় টিকিট ছাড়াই বিমানবন্দরে এসেছি। ভোর থেকে অপেক্ষা করছি।
কয়েকজন শ্রমিক জানান, দুপুর ১টায় বিমানের একটি ফ্লাইটে তাদের মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৪টায়ও ওই দালালের কোনো খবর নেই, টিকিটও দেননি। এ অবস্থায় মালয়েশিয়া যাওয়া অনিশ্চিত হয়েছে পড়েছে।
বিমানবন্দরে মালয়েশিয়াগামী আরেক যাত্রী মাদারীপুরের এনামুল জানান, তিনি এসেছেন রাত ৮টায়। টিকিট না থাকার কারণে টার্মিনালের ভেতর ঢুকতে পারছেন না। টেলিফোনে দালালের সঙ্গে যোগাযোগ হলে শুধু বলছেন- অপেক্ষা করেন, টিকিটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় মালয়েশিয়া যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
মালয়েশিয়া সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে শুক্রবারে পর বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশ থেকে কোনো কর্মীকে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। গত জানুয়ারি মালয়েশিয়ার মন্ত্রিপরিষদ এ সিদ্ধান্ত নেয়। একই সাথে বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের সঙ্গে এ সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি পুনরায় করার অনুমোদন দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, নেপাল, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে কর্মী যায় মালয়েশিয়ায়।
আপাতত মালয়েশিয়া সরকারের এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। গত ২৯ মে মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার হাসনা মোহাম্মদ হাসিম সাংবাদিকদের জানান, বিদেশি কর্মীদের প্রবেশের সময়সীমা বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
এ পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন ছুটিতে বাংলাদেশে আসা প্রবাসী কর্মীরা। অন্যদিকে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মালয়েশিয়াগামী ফ্লাইটগুলোর টিকিটের দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। লাখ টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না একটি টিকিট।
বিমানবন্দরে অপেক্ষমান কর্মীদের অভিযোগ, এজেন্সিগুলো টিকিট ম্যানেজের আশা দিয়ে এখন প্রতারণা করছে। অনেকের ফোন ধরছে না, যোগাযোগ করছে না। অনেককে আবার পরবর্তী ফ্লাইটের আশা দেয়া হচ্ছে। ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিট থাকা স্বত্তেও তারা আদৌ যেতে পারবে কিনা জানেন না। অনেকরই অভিযোগ টিকিট পাইয়ে দিতে তাদের কাছ থেকে তিনগুন পর্যন্ত টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের দাবি প্রবাসী কর্মীদের। তাদের দাবি, হয় সময় বাড়ানো হোক নতুবা তাদের টিকিটের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক।
শুক্রবার সকাল থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে গেছে মালয়েশিয়ায়গামী তিনটি ফ্লাইট। রাত পর্যন্ত ছেড়ে যাবে আরও চারটি। এসব ফ্লাইটে যেতে পারবেন দেড় হাজার শ্রমিক।
আরও পড়ুন:
মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে হাজার হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক
বাংলাদেশিদের ১২ ক্যাটাগরির ভিসা দেবে ওমান