শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আইন-আদালত

পরিবার নিয়ে দেশ ছেড়েছেন বেনজীর


পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ।

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩০ মে, ২০২৪ ১০:১৮ : অপরাহ্ণ

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর থেকে অনেকটাই আড়ালে চলে গেছেন একসময়ের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ। যদিও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চোখে এখনো আসামি নন, তবে অনুসন্ধান শেষে আসামি করা হবে তাকে।

চলমান এই পরিস্থিতি তৈরির আগেই গত ৪ মে সপরিবারে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন পুলিশের সাবেক এই আইজি।

বেনজীর আহমেদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে, গত ৪ মে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনের একটি ফ্লাইটে তিন মেয়ে ও স্ত্রীসহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যান তিনি।

পুলিশের আইজি হিসেবে বছর দেড়েক আগেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বেশ সোচ্চার ছিলেন বেনজীর আহমেদ। আর স্মরণকালের ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী সেই আইজিপিই এখন দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত।

আইজিপি হিসেবে অবসরের পর মাত্র ১ বছর ৮ মাস পার হয়েছে। এর মধ্যেই সঙ্গী ও বন্ধুহারা হয়ে পড়েছেন বেনজীর আহমেদ। প্রকাশ্যে আসছেন না তিনি।

গত ২৬ মে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে এ পাঁচজনের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশও দেওয়া হয়।

কিন্তু আদালত থেকে নির্দেশনা দেওয়ার আগেই বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের অধিকাংশ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৩টি অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছিল দুদক।

ওই সব হিসাব থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা উত্তোলনের আলামত পেয়েছে দুদকের অনুসন্ধান টিম। তবে টাকার পরিমাণ বলতে পারেনি তারা। অনুমান করা হচ্ছে, টাকার পরিমাণ কয়েকশ কোটি টাকা হবে।

দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, সাবেক আইজিপির অনেক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করা হয়েছে। হিসাব ফ্রিজের তথ্য হয়ত আগেই টের পেয়েছিলেন তিনি।

সম্পদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামী ৬ জুন বেনজীর আহমেদকে এবং ৯ জুন তার স্ত্রী জীশান মির্জাসহ সন্তানদের দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে তাদের তলবি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

এদিকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের কণ্ঠে সাবেক এই আইজিপির কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ শোনা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, তিনি যতই ইনফ্লুয়েন্সার হোক না কেন, সরকার কিন্তু কাউকে কোনো ধরনের প্রোটেকশন দেবে না।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যে যতটা অপকর্ম ও অপরাধ করেছে, সে জন্য তাকে শাস্তি পেতেই হবে।

সাবেক এই আইজিপিকে এখনো আসামি মনে করছে না দুদক। তবে যে অর্থবিত্তের সন্ধান দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, তাতে আসামি হওয়ায় এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সময় তাকে আসামি বলা যায় না। অনুসন্ধান শেষ হতে হবে, প্রতিবেদন আসতে হবে। তারপর তদন্ত কর্মকর্তা সেটি দাখিল করলে কমিশন যাচাই-বাছাইয়ের পর যদি মামলা দায়েরের অনুমোদন দেয় এবং মামলা হয়, তবেই তাকে আসামি বলা যায়।

তবে এই আইনজীবীর ভাষ্য, জব্দ করা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের টাকা আগে তুলে রাখলেও নতুন করে কোনো ব্যাংকে জমা দিলে তা আইনের আওতায় আসবে।

আরও পড়ুন: 

পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ

স্ত্রী-কন্যাসহ বেনজীরকে দুদকে তলব

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর