সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিলাসবহুল জীবনযাপনের শহর দুবাইয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনীদের বিপুল পরিমাণ গোপন সম্পদের পাহাড় গড়ে উঠেছে।
তাদের তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশি নাগরিকও। ৩৯৪ বাংলাদেশির ২ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা মূল্যের ৬৪১টি সম্পত্তি রয়েছে দুবাইয়ে।
সম্পত্তির মালিকের এ তালিকায় আরও রয়েছেন বিভিন্ন দেশের বড় ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এমনকি বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি, অর্থ পাচারকারী ও অপরাধীরাও সেখানে বিপুল সম্পদের মালিক।
এসব সম্পদের তথ্য ফাঁস করেছে ‘দুবাই আনলকড’ নামে বৈশ্বিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার একটি প্রকল্প।
এতে ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানির পাশাপাশি রয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির পরিবারের সদস্যরা।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) ও নরওয়ের সংবাদমাধ্যম ই-টোয়েন্টিফোরের নেতৃত্বে অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
৫৮টি দেশের ৭৪টি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা দীর্ঘ ছয় মাস ধরে এই প্রকল্পে অনুসন্ধান চালিয়েছেন। এতে বিশেষ করে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিদেশিদের সম্পদের মালিকানার বিস্তারিত চিত্র উঠে আসে।
গত মঙ্গলবার ‘দুবাই আনলকড’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে ওসিসিআরপি।
দুবাইয়ের সরকারি ভূমি দপ্তরসহ অন্যান্য রিয়েল এস্টেট কোম্পানির ফাঁস হওয়া তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে অনুসন্ধান চালানো হয়।
ওসিসিআরপি বলছে, দুবাইয়ে বিদেশিদের মালিকানায় থাকা সম্পদের পরিমাণ ১৬০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুবাইয়ে বিদেশিদের সম্পদের মালিকানার তালিকায় শীর্ষে আছেন ভারতীয়রা। দেশটির ২৯ হাজার ৭০০ নাগরিকের ৩৫ হাজার সম্পত্তি রয়েছে দুবাইয়ে। ২০২২ সাল পর্যন্ত দুবাইয়ে ভারতীয়দের এসব সম্পত্তির মোট মূল্য ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বলে ধারণা করা হয়।
ভারতের পর এই তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান। দুবাইয়ে ১৭ হাজার পাকিস্তানির হাতে ২৩ হাজার সম্পত্তির মালিকানা রয়েছে।
আমিরাতের এই শহরে গোপন সম্পদের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি থেকে শুরু করে বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানেরও গোপন সম্পদের খোঁজ মিলেছে দুবাইয়ে। দুবাইয়ের কৃত্রিম দ্বীপ পাম জুমেইরাতে মুকেশ আম্বানির প্রায় ২৪ কোটি ডলারের সম্পদ রয়েছে।
ওসিসিআরপির তথ্য বলছে, দুবাইয়ে গোপনে সম্পদ গড়েছেন অন্তত ৩৯৪ জন বাংলাদেশি। শহরটিতে এই বাংলাদেশিদের মালিকানায় রয়েছে ৬৪১টি সম্পত্তি। বাংলাদেশিদের মালিকানায় থাকা এসব সম্পত্তির মূল্য ২২ কোটি ৫৩ লাখ ডলারেরও বেশি।
তবে বাংলাদেশিদের সম্পদ ও মালিকানার তথ্য জানানো হলেও তাদের বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি ওসিসিআরপি।