শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৪ | ১৭ কার্তিক, ১৪৩১ | ২৯ রবিউস সানি, ১৪৪৬

মূলপাতা বিএনপি

আ.লীগ সরকার ভারতের কাছে অত্যন্ত দুর্বল: মির্জা ফখরুল


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৬ মে, ২০২৪ ৩:০১ : অপরাহ্ণ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ভারত গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘এই ব্যর্থতার মূল কারণ হচ্ছে, যে সরকার এখন আছে, সেই সরকার পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার। তারা বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে প্রকৃত অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ তারা (সরকার) তাদের (ভারতের) কাছে অত্যন্ত দুর্বল।’

ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু ফারাক্কা বাঁধ নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের ক্ষেত্রে তারা সব সময় গড়িমসি করেছে এবং তারা এই সমস্যার সমাধান করেনি, করছেও না। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে এই যুক্তি; করছি, এই হয়ে যাবে, এখন ভালো অবস্থা আছে, এই করে করে কিন্তু সরকার কাটিয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফারাক্কা-তিস্তা এবং অন্যান্য অভিন্ন নদীগুলোর সমস্যার সমাধান কী করে হবে? কারণ তারা (আওয়ামী লীগ) তো দখলদারিত্ব করছে এখানে। তারা তো একটা বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে এই সরকার ক্ষমতা দখল করে আছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বরাবরই লক্ষ করেছি যে, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই আমাদের প্রতিবেশী-যার কাছে আমাদের স্বাধীনতায় তাদের ভূমিকার জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি সব সময়। তার পরেই আমরা যেটা লক্ষ্য করেছি, বাংলাদেশকে একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার জন্য সব সময় তারা তাদের সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফারাক্কা দিবস আমাদের ওই কথাই মনে করিয়ে দেয়, জনগণের শক্তির কাছে বড় শক্তি আর কিছু নেই। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন জনগণের মানুষ। তিনি সব সময় জনগণের কথা বলেছেন, জনগণের জন্য সংগ্রাম করেছেন। কোনো দিন ক্ষমতার আশেপাশে যাননি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ফারাক্কা দিবস আমাদের জন্য একটা প্রতীক, আমাদের আন্দোলন-সংগ্রামের প্রতীক। আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের যে লক্ষ্য; বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, সেই লক্ষ্যে যদি আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি, অবশ্যই আমরা সেখানে জয়লাভ করবো।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে আটক এবং তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় বিদেশে নির্বাসিত করে রেখেছে। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে মাত্র তিন দিনে ২৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনো সেই নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে। আমাদের নেতাকর্মী যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছেন, সাজা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এর মূল কারণ হচ্ছে, আজকে এমন একটা সরকার দখলদারিত্ব নিয়ে ক্ষমতায় বসে আছে—যাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে, তারা তাদের স্বার্থ এবং তাদের প্রভুদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য জনগণের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে।’

এই সরকার জনগণের সরকার নয় মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কোনো নির্বাচনই তারা করে না। কারণ তারা জানে, নির্বাচন করলে তাদের একটা ভূমিধস পরাজয় হবে, নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সে জন্য বিভিন্ন কৌশলে তারা এখানে নির্বাচন দেখিয়ে তারা ক্ষমতায় টিকে আছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের সব উন্নয়ন, যেটা বলা হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণভাবে একটা মিথ। এটা কোনো উন্নয়ন নয়। শুধুমাত্র এই সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য একটা গোষ্ঠী তৈরি করা হচ্ছে, যে গোষ্ঠী এই তথাকথিত উন্নয়ন থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়।’

মাফিয়া রাষ্ট্র তৈরি করা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখনকার সরকারের মদদপুষ্ট যেসব ব্যবসায়ী আছেন, তারা সবাই তথাকথিত সরকারের গুণকীর্তন গায়-একটা মাত্র উদ্দেশ্য, এই সরকার টিকে থাকলে তারা তাদের লুণ্ঠন, বিদেশে টাকা পাচার করে সম্পদ তৈরি, তারা সেগুলো করতে পারবেন।’

মন্তব্য করুন


আরও খবর