রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১১ মে, ২০২৪ ৮:২১ : অপরাহ্ণ
নিজ দেশে থেকে আমরা পরবাসী হয়েছি মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ দাবি করে তারা দেশ চালাচ্ছে। আসলে কি তারা দেশ চালাচ্ছে? তারা দেশ চালায় না। এক অদৃশ্য শক্তি দেশ চালাচ্ছে। আর তাদের নির্দেশেই আজকে বাংলাদেশে তারা (আওয়ামী লীগ) মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে।’
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসাসহ নিঃশর্ত মুক্তি, বিএনপি নেতাদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে যুবদল।
আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাময়িকভাবে আন্দোলনে কিছুটা ভাটা পড়তে পারে। অনেকে বলেন, আবার আন্দোলন শুরু। আন্দোলন চলছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যখন বন্দি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারেন না, টুকু (সুলতান সালাউদ্দিন টুকু) জেলে তখন তো আন্দোলন চলছেই। প্রতিটি কারারুদ্ধ নেতাকর্মী আন্দোলন করছেন।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘লজ্জা করে না। শরম বলতে তো আর কিছু নাই। লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে ফেলেছেন। এমনভাবে কথা বলেন, এটাকে তারা তাদের পৈতৃক সম্পদ মনে করেন। তারা যেভাবে খুশি সেভাবে ব্যবহার করবেন। জনগণের যে চাহিদা সেদিকে তাকান না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সারা দেশ কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া চাকরি হয় না। বিসিএস পাস করার পরও চাকরি হচ্ছে না। আজকে চাকরির জন্য ডিএনএ টেস্ট করা হয়, তারা বিএনপি করে কিনা।
২৮ অক্টোবরের সমাবেশ পণ্ড করার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকেও চেষ্টা করেছিলেন। আজকে একটা পটকা ফুটিয়েছেন। সেটা কে ফুটিয়েছে আমরা বুঝি না? দেশের মানুষ বুঝে না? আবারও সরকার দলীয় লোকেরা সেই অবস্থা তৈরি করতে চেয়েছে।’
নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়ার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোনো শুনানি ছাড়া ২ হাজার মানুষকে সাজা দিয়েছেন। এটা কোন আইনের শাসন হতে পারে না। বিচারবিভাগের স্বাধীনতা নাই। আপনারা (সরকার) কেড়ে নিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘শুক্রবার আওয়ামী লীগের সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, ‘আবার সন্ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না। তাহলে এবার ডাবল শিক্ষা দিয়ে দিবো।’ বিএনপি কখনোই সন্ত্রাস করে না। বিএনপির সন্ত্রাসের ইতিহাস নেই। সন্ত্রাসের ইতিহাস আপনাদের। সন্ত্রাসের মাধ্যামে আওয়ামী লীগের জন্ম।’’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যখন আওয়ামী লীগে মওলানা ভাসানী সভাপতি ছিলেন। মওলানা ভাসানীকে আপনারা বিতাড়িত করে দিয়ে, মেরে তাড়িয়ে দিয়ে তাকে রূপমহল সিনেমা হল থেকে বের করে দিয়েছিলেন। তারপরে সেদিন মওলানা ভাসানী ন্যাপ গঠন করেছিলেন। সেই ইতিহাস আমরা ভুলে যাই নাই। পূর্ব পাকিস্তান আমলে প্রাদেশিক পার্লামেন্ট ছিলো, সেই পার্লামেন্টে ডেপুটি স্পিকারকে আপনারাই পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছিলেন। আমরা ভুলে যাইনি।’
তরুণ ও যুবকদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কোনো দেশের মুক্তি হয় না, যদি তরুণ ও যুবকরা এগিয়ে না আসে। শুধু ঠিক বললে এবং জেল খাটলে চলবে না। আপনাদের বেরিয়ে আসতে হবে। রাজপথে জনগণকে নিয়ে চলে আসতে হবে। সেই জনগণকে নিয়ে আরো শক্তিশালী দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব জলাঞ্জলে যাবে।’
এর আগে, দুপুরের পর থেকে সমাবেশে অংশ নিতে ব্যানার, ফেস্টুনসহ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে জড়ো হন যুবদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী। এ সময় তারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকা।
আরও পড়ুন: ডোনাল্ড লু আসার খবরে বিএনপি চাঙা: ওবায়দুল কাদের