রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২২ এপ্রিল, ২০২৪ ৭:২৭ : অপরাহ্ণ
ভারতকে সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ।
তিনি বলেন, ‘ভারত আসলে কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নয়। তারা একটি সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র। বন্ধু রাষ্ট্র খ্যাত ভারত আমাদের সুরমা ও কুশিয়ারাসহ সব নদ-নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফারাক্কা বাঁধের ফলে রাজশাহীসহ পুরো বরেন্দ্র অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। এখন গভীর নলকূপেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ভারত পদ্মার পানি প্রবাহ আটকে দেওয়ার জন্য দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে এক বিরুপ প্রভাপ পড়েছে।’
তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে বাসদের উদ্যোগে তিস্তা অভিমুখে রোডমার্চ নিয়ে যাওয়ার সময় আজ সোমবার সকালে বগুড়ায় এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল রোববার সকালে ঢাকা থেকে শুরু হওয়া রোড মার্চটি রাতে বগুড়ায় এসে পৌঁছায়। পরে আজ সোমবার সকাল ১১টার দিকে শহরের সাতমাথায় মুজিব মঞ্চের সামনে পথসভার আয়োজন করে দলটি।
পথসভায় বক্তারা বলেন, ভূগর্ভস্থ ও ভূ-উপরিস্থিত জলপ্রবাহ নিয়ে এর অববাহিকার পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার বর্গকিলোমিটার। যার মধ্যে বাংলাদেশে ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার এবং ভারতে ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উজানে ভারত গজলডোবায় বাঁধ দেওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে যাচ্ছে তিস্তা নদী। খরা মৌসুমে আসতে না আসতেই পানি প্রবাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে কখনও ৫০০ কিউসেকের নিচে নেমে যায়। অথচ ঐতিহাসিক গড় (১৯৭৩-১৯৮৫) অনুযায়ী পানির প্রবাহ থাকার কথা কমপক্ষে ১০ হাজার কিউসেক।
বক্তারা আরও বলেন, চলতি মৌসুমে রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারি এলাকায় ১ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পানির অভাবে তা কমে ৮ হাজার হেক্টরে নেমে এসেছে। তাই আমরা রাজনৈতিক দল, তিস্তা পাড়ের মানুষ, কৃষকদের নিয়ে তিস্তার পানি ন্যায্য হিস্যা আদায়ে মাঠে নেমেছি। এ দাবি বাস্তবায়নে সকলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
পথসভায় বক্তারা আরও বলেন, ভারত ৫৪টি নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করছে। আন্তর্জাতিক আইন ও নীতি লঙ্ঘন করে পানি প্রত্যাহার করায় সব নদীতে পানির প্রবাহ কমে গেছে। ফলে নদীগুলো এখন মরতে বসেছে। দেশের অভ্যন্তরে নদী দখল ও দূষণ চলছে অবাধে।
পথসভা শেষে রোডমার্চটি বগুড়া শহরের সাতমাথা, থানার মোড়, কাঠালতলা ও নবাববাড়ীসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কালিতলা মোড় থেকে তিস্তা ব্যারাজ অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। এ সময় তিস্তা পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে স্লোগান তোলেন অংশগ্রহণকারীরা।
আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে রংপুর শাপলা চত্বরে সমাবেশ শেষে বিকেল ৪টার দিকে রোডমার্চটি নীলফামারীর ডিমলার শহীদ মিনার চত্বরে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে।