শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

অভিযোগের বিষয়ে মুখ খুললেন বেনজীর আহমেদ


পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২০ এপ্রিল, ২০২৪ ১:১৭ : অপরাহ্ণ

সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে মুখ খুললেন পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ। আজ শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এসে ‘আমার কিছু কথা’ শিরোনামে এক ভিডিও বার্তায় তিনি তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের জবাব দিয়েছেন। তার নামে থাকা বিভিন্ন সম্পদ ও ব্যবসা নিয়ে সংবাদপত্রে যে তথ্য এসেছে তার সব সঠিক নয় বলেও দাবি করেন তিনি।

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, আমি প্রায় দুই বছর আগে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি। এই অবসরকালীন আমি নিরিবিলি জীবন কাটাচ্ছি। চাকরিকালীন বিগত ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী কর্তৃক অবিরত এবং ক্রমাগত অপপ্রচার এবং ব্যক্তিগত চরিত্রহননের অপচেষ্টার শিকার হয়েছি।’

পুলিশের সাবেক এই আইজি বলেন, ‘আমার পরিবার ও আমার নামে অসত্য প্রকাশিত হয়েছে। তিলকে তাল বানিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যাচার।’

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমার এবং পরিবারের ঢাকা ও ঢাকার বাহিরের সম্পত্তির তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। বেতন ভাতার হিসাব কাল্পনিক এবং ভুল। গোপালগঞ্জের পারিবারিক কৃষি খামারের ভূমির পরিমাণ যা উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। জমির সকল তথ্য ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ আছে। এছাড়া আমার পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয় পত্রসহ বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। যা আমাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’

পুলিশের সাবেক এই আইজি বলেন, ‘আমার অবসর গ্রহণের প্রায় দুই বছর পরে আকস্মিকভাবে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে এই ধরণের একটি সংবাদ কেন পরিবেশন হল আমি সচেতনভাবেই সেই আলোচনায় যাবো না। তবে এর কারণ রাজধানীর সব সাংবাদিক ও সচেতন মহলের মুখে মুখে।’

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা প্রকাশিত দুই কিস্তির সংবাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করেছি। এতে সব মিলিয়ে ৪৫টি তথ্য, অভিযোগ এবং অপমানজনক বক্তব্য রয়েছে। তার মধ্যে ২৪টি তথ্য বা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং কল্পনাপ্রসূত। দুইটি বিষয়কে সাত বার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে এবং দুইটি তথ্যকে ভুল প্রেক্ষাপটে বিকৃতভাবে পরিবেশন করা হয়েছে। বাকি দশটি তথ্যকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে, শুধু তিলকে তাল নয়, তালগাছের ঝাড় সমেত বানয়ে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’

সেন্টমার্টিনে নারিকেল বাগান নেই উল্লেখ করে পুলিশের সাবেক এই আইজি বলেন, ‘সেখানে যে জমি আছে তার পরিমাণ সংবাদে উল্লেখিত পরিমাণের চেয়ে অনেক কম। এছাড়া ঢাকার মগবাজারে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থাকার বলা হয়েছে। এই এলাকা এবং আশপাশের এলাকায় এমন কোনো ফ্ল্যাট নেই আমার। বসুন্ধরা এলাকায় মেয়ের বিশ্রামের জন্য ফ্ল্যাট কেনার বিষয় সংবাদে উল্লেখ করা হলেও সেখানে এমন কোনো ফ্ল্যাট নেই। একটি অসমাপ্ত ফ্ল্যাট কেনা হলেও পরবর্তীতে ব্যবহারযোগ্য না হওয়ায় বিক্রি করে দেওয়া হয়।’

সম্প্রতি প্রকাশিত এক জাতীয় দৈনিকের দাবি, পুলিশের সাবেক আইজিপি ও র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজি।

জাতীয় ওই দৈনিকে ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে তার নানা অর্থ সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়। বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র। এছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার কাছের এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।

অথচ গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর