শুরু থেকে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়লেও জানিথ লিয়ানাগের সেঞ্চুরিতে ২৩৫ রানের লড়াই করার পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা। ওই পুঁজি নিয়েই স্বাগতিক বাংলাদেশকে চেপে ধরেছিল তারা। কিন্তু বদলি তরুণ ওপেনার তানজিদ তামিমের দারুণ এক ইনিংস ও তরুণ লেগ স্পিন অলরাউন্ডার রিশাদ হোসেনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে লাল-সবুজের দল। ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে ওয়ানডে সিরিজ।
আজ সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাটিং করে ৫০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ৪০.২ ওভারে ছয় উইকেটে ২৩৭ রান তুলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
দিনের আলোয় খেলা হওয়ায় চট্টগ্রামে সিরিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নেয় শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় তারা। ১৫ রানে খায় দ্বিতীয় ধাক্কা। সেখান থেকে ১১৭ রানে ৫ উইকেট হারায় সফরকারীরা। ব্যর্থ হন ওপেনার পাথুন নিশাঙ্কা (১) ও আভিস্কা ফার্নান্দো (৪)। রান পাননি সাদেরা সামারাবিক্রমাও (১৪)। দলটির হয়ে পাঁচে নামা লিয়ানাগে খেলেন ১০২ বলে ১০১ রানের ইনিংস। তার ব্যাট থেকে ১১টি চার ও দুটি ছক্কার শট আসে। এছাড়া অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস চাপে দাঁড়িয়ে ২৯ ও সহ অধিনায়ক চারিথা আশালঙ্কা ৩৭ রান করেন।
জবাব দিতে নেমে শুরুতে দুই টপ অর্ডার ব্যাটার এনামুল হক ও নাজমুল শান্তকে হারায় বাংলাদেশ। এনামুল ১২ রান যোগ করলেও তানজিদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৫০ রানের জুটি হয় তাদের। এরপর ফিরে যান শান্ত (১)। তানজিদের সঙ্গে ৪৯ রান যোগ করে হৃদয় ফিরে যান ২২ রান করে। এরপর মাহমুদউল্লাহ ১ রানে ফিরলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ওই চাপ থেকে পুরোপুরি দলকে উদ্ধার করতে পারেননি ভালো ব্যাটিং করা তানজিদ। তিনি ৮১ বলে ৮৪ রান করে আউট হন। তার ব্যাট থেকে নয়টি চার ও চারটি ছক্কার শট আসে। ১৩০ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
শেষ ভরসার জুটি হিসেবে ক্রিজে দাঁড়ান মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী মিরাজ। কিন্তু ওই জুটিও খুব বড় হয়নি। মিরাজ ৪০ বলে ২৫ রান করে ফিরলে ৪৮ রানে ভাঙে জুটি। ম্যাচ তখন টালমাটাল। তরুণ রিশাদকে নিয়ে মুশফিক জয়ের বন্দরে ম্যাচ ভেড়াতে পারবেন কিনা সংশয়। ঠিক তখনই মুহূর্তের ঝড়ে ম্যাচ বের করে নেন রিশাদ। তিনি খেলেন ১৮ বলে পাঁচটি চার ও চার ছক্কায় ৪৮ রানের ইনিংস। এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে তার ঝড় দেখা মুশফিক ৩৬ বলে ৩৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশ ৯.৪ বল থাকতে জয় তুলে নেয়।
এর আগে বাংলাদেশ দলের হয়ে দারুণ বোলিং করেন তাসকিন আহমেদ। তিনি ৩ উইকেট তুলে নেন। প্রথম দুই ম্যাচে বিশ্রামে থাকা মুস্তাফিজ দখল করেন ২ উইকেট। এছাড়া মেহেদী মিরাজ দুটি ও রিশাদ হোসেন এক উইকেট নিয়েছেন। লঙ্কানদের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন লাহিরু কুমারা। দারুণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন রিশাদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৩৫/১০ (নিশাঙ্কা ১, ফার্নান্দো ৪, কুশল ২৯, সাদিরা ১৪, আসালাঙ্কা ৩৭, লিয়ানাগে ১০১* , ভেল্লালাগে ১, হাসারাঙা ১১, থিকসানা ১৫, প্রমোদ ৩, কুমারা ১; শরিফুল ১০-০-৫৫-০, তাসকিন ১০-১-৪২-৩ , মুস্তাফিজ ৯-১-৩৯-২, সৌম্য ২-০-১০-১, মিরাজ ১০-১-৩৮-২, রিশাদ ৯-০-৫১-১)
বাংলাদেশ: ৪০.২ ওভারে ২৩৭/৬ (বিজয় ১২, তানজিদ ৮৪, শান্ত ১, তাওহিদ ২২, মাহমুদউল্লাহ ১, মুশফিক ৩৭*, মিরাজ ২৫, রিশাদ ৪৮*; থিকসানা ৯-১-৩১-০, মাদুশান ৭-০-৫২-০, কুমারা ৮-০-৪৮-৪, হাসারাঙ্গা ৯-০-৬৪-২, ভেল্লালাগে ৬.২-০-৩৫-০, আসালাঙ্কা ১-০-৮-০)
ফল: বাংলাদেশ চার উইকেটে জয়ী।