রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন
প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৮ অপরাহ্ণ
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধ করার চক্রান্ত ছিল বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘দেশে বিগত ৭ জানুয়ারি একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এ নির্বাচনে সহিংসতা হয়নি বললেই চলে, যেখানে ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে এ নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি বহু ষড়যন্ত্র ছিল। এ নির্বাচন বন্ধ করার চক্রান্ত ছিল। তারপরেও দেশে উৎসবমুখর নির্বাচন হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে যারা নির্বাচন বর্জন করেছিল, বানচাল করার চেষ্টা করেছিল, তারা ভোটের পরে যখন দেখলো সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা/অভিনন্দন বার্তার বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন তখন তাদের মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। এখন তারা আবোল-তাবোল বলা শুরু করেছে।’
আজ বুধবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
বিভিন্ন দেশে ভোট পড়ার তথ্য তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রোমানিয়ায় ২০২০ সালের নির্বাচনে ৩১.৮৪ ভোট পড়েছে। হংকংয়ে ৩০ শতাংশ ভোট পড়েছে। বুলগেরিয়ায় ২০২২ সালে ৩৭.৯৮ শতাংশ, আয়ারল্যান্ডে ৪৩.৮৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। পর্তুগালে ৩৯.২৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ সেখানে নির্বাচন প্রতিহতের কোনো ঘোষণা ছিল না। কিন্তু আমাদের দেশে কীভাবে নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা হয় তা সবাই জানেন। কিন্তু এরপরেও যে উৎসবমুখর পরিবেশে যে ভোট হয়েছে তাকে ‘ফেসটিভ ইলেকশন’ বলা চলে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, ‘যদি জানুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত আগুন দিয়ে ট্রেনে একটি শিশুসহ পুরো পরিবারকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, তা না হলে নির্বাচনে আরো ১৫-২০ শতাংশ ভোট পড়তো। নির্বাচনের পরে যে অপশক্তি নির্বাচন বর্জন করেছিল তারা উন্মুখ হয়ে বসেছিল বিশ্ববাসী এ নির্বাচন নিয়ে কী বলে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশ আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে চার চার বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা শুভেচ্ছা জানিয়েছে। তখন তারা (বিএনপি) ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছে। বিশ্বের বহু দেশ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে, আরো ৩২ টি সংস্থা- জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউরোপীয় কমিশন, বিশ্ব ব্যাংক সহ আন্তর্জাতিক সংস্থা শুভেচ্ছা জানিয়েছে। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো গভীরতর করার কথা বলেছেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘‘বিশ্বের যেখানেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান, সেখানেই তিনি ‘সেন্টার অব এটাকশন’ হন। গাজায় নির্বিচারে যে গণহত্যা হচ্ছে তা নিয়ে বিশ্ব নেতারা যখন নিশ্চুপ, নির্বিকার, সেখানে এ গণহত্যা জোরালোভাবে বন্ধ করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে গাজায় গণহত্যা হচ্ছে সেখানে ৩০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। এর বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আর পৃথিবী অসহায় হয়ে তাকাচ্ছে বা নীরব থাকছে। এখানে মানবতার বিরুদ্ধে অনেকেই নীরব থাকছে। এটা অপরাধকে সমর্থন জানানোর শামিল। কিন্তু জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যা হচ্ছে। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার মা, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবার সময় তিনি ঘরের দুয়ার শুধু নয়, মনের দুয়ারও খুলে দিয়েছিলেন। এখন রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতি বছর ৩৫ হাজার শিশু জন্ম নেয়। এটা আমাদের মত ঘনবসতিপূর্ণ দেশে সমস্যার কারণ। এ জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের লক্ষ্য আলোচনায় বসে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। প্রত্যাবসন ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।’