রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:০৩ অপরাহ্ণ
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, তাকে জেলে দেওয়া হতে পারে।
সম্প্রতি জার্মানির সাপ্তাহিক ডি সাইট পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
সাক্ষাৎকারটি গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গত মাসে ড. ইউনূসকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এখন তিনি জামিনে আছেন।
গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস অভিযোগ করেন, গ্রামীণ ব্যাংক তাদের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করেছে। তবে গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান এ কে এম সাইফুল মজিদ দাবি করেন, সাতটি প্রতিষ্ঠান আইন মেনেই নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। ড. ইউনূস মানি লন্ডারিং করেছেন- এমন প্রমাণ হাতে রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। গত রোববার এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর বলে দাবি করে ইউনূস সেন্টার।
সাম্প্রতিক এসব ঘটনার পেছনে কে আছে- এই প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে সবাই জানে, এসব কীভাবে ঘটে। কারও নাম নিতে নেই; এটা অনেক খারাপ পরিণতি নিয়ে আসে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ইউনূসকে পদ্মা নদীতে চুবানি’ দেওয়া সংক্রান্ত মন্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নিশ্চিত করতে চান যে, মানুষ আমাকে ঘৃণা করুক।’
শেখ হাসিনা কেন এমন চান-সেটি তিনি জানেন না বলেও সাইট অনলাইনকে জানান ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘কেউ বলে এটা ব্যক্তিগত, কেউ বলে এটা রাজনৈতিক।’
২০১১ সালে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ তোলা হলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাকে সরানোর পর তারা আশা করেছিলেন, আমাকে আর দেখা যাবে না, কেউ আমাকে মনে রাখবে না।’
এরপরও ড. ইউনূস সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচিত নাগরিক এবং তাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বক্তৃতা দিতে ডাকা হয়-সাইট অনলাইন এমন তথ্য উল্লেখ করলে নোবেলজয়ী বলেন, ‘তারা জানতেন না, এটা কীভাবে কী করতে হবে। সে কারণে তারা এখন হাস্যকর আইনি মামলা নিয়ে এসেছেন।’
কিছু মানুষ বলেন, শেখ হাসিনা তার (ইউনূসের) জনপ্রিয়তায় শঙ্কিত এবং তিনি (ইউনূস) হয়তো প্রধানমন্ত্রী হতে চান- সাইট অনলাইনের সাংবাদিকদের এমন কথার প্রতিক্রিয়ায় ড. ইউনূস বলেন, ‘দ্যাটস দ্য লাস্ট থিং আই ওয়ান্ট (এটা সবশেষ বিষয়, যা আমি চাই), যা করছি তা নিয়েই আমি খুশি।’
আগামীতে কী হতে পারে বলে আপনি মনে করেন-এই প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, ‘অনেক ধরনের সামাজিক ও আইনি শাস্তি। তারা আমাকে জেলে পাঠাতে পারেন। এছাড়া আমার আরও আশঙ্কা, এতোদিন ধরে যা তৈরি হয়েছে, সব ধ্বংস করা হবে।’
সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে রাশিয়ায় নাভালনির মৃত্যুর প্রসঙ্গ তোলা হলে ড. ইউনূস বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা মর্মান্তিক। মানুষ এখন তাদের চোখে এই প্রশ্ন নিয়ে আমার দিকে তাকায়। তাদের আশঙ্কা, আমার সঙ্গে একই বিষয় ঘটতে পারে।’
ড. ইউনূস জানান, তার অনেক বন্ধু তাকে তাদের দেশে থাকতে বলেছেন। আমাকে নাগরিকত্ব, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করার সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমি বাংলাদেশ ছাড়তে চাই না। আমি তাদের সবসময় বলি, আমি সারা জীবন বাংলাদেশে কাজ করেছি। তাছাড়া আমি যদি যাই, আমি যাদের সঙ্গে কাজ করি, তাদের কী হবে?