শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা দেশজুড়ে

নৌবাহিনীর সদস্য পরিচয়ে একে একে ১৩ বিয়ে, ১৪ নম্বরে ধরা


নৌবাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে ১৩ তরুণীকে বিয়ে করার অভিযোগে আটক মহিদুল ইসলাম মইদুল (ছবির মাঝখানে)। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ৯:১৯ : অপরাহ্ণ

২০১৬ সালে শৃঙ্খলার ভঙ্গের কারণে নৌবাহিনীর অফিস সহায়ক পদ থেকে চাকরি হারান মহিদুল ইসলাম মইদুল (২৭) নামের এক যুবক। এরপর নৌবাহিনীর সদস্য পরিচয়ে একে একে ১৩টি বিয়ে করেন তিনি। বিয়ে করেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে প্রলোভন দেখিয়ে ধাপে ধাপে হাতিয়ে নেন প্রায় অর্ধকোটি টাকা।

১৪ তম বিয়ের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে ভুক্তভোগী এক নারীর অভিযোগে গতকাল শুক্রবার গাজীপুরে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হন তিনি। এ সময় তার কাছ থেকে নৌবাহিনীর পোশাক পরিহিত অস্ত্রসহ কিছু ছবি জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া তার সহযোগী ঘটক কুদ্দুস আলীকেও আটক করা হয়েছে।

আজ শনিবার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস বিফ্রিংয়ে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মেদ ভূঞা এ তথ্য জানান।

মহিদুল ইসলাম মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার বাসিন্দা। বিগত কয়েক বছরে প্রতারণা করে ময়মনসিংহে ছয়টি, মানিকগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে তিনটি এবং কিশোরগঞ্জে একটি বিয়ে করেন। বিয়ে করে প্রত্যেক স্ত্রীর পরিবারের কাছ থেকে প্রলোভন দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এবার ১৪ তম বিয়ের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে ময়মনসিংহের ভুক্তভোগী এক নারীর অভিযোগে গোয়েন্দা জালে ধরা পড়েন তিনি।

মইদুলের গ্রেপ্তারের খবরে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা কার্যালয়ে এসে হাজির হোন প্রতারিত ছয় স্ত্রী ও তাদের পরিবার।

অনার্স সম্পন্ন করা প্রতারণার শিকার এক নারী বলেন, ‘তাদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী এক ঘটকের মাধ্যমে মইদুল প্রথমে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। পরিবারের লোকজন প্রথমে রাজি না হলেও তাঁর জোরালো সুপারিশে এক মাস পর রাজি হয়ে যায়। কারণ ছিল ছেলে নৌ-বাহিনীতে চাকরি করে। সে তখন তার পোশাক পড়া ছবিও পাঠায়। ভাঙনে বাড়িঘর ভেঙে যাওয়াসহ তার বাবা-মা মারা যাওয়ায় সে তার চাচাতো ভাই পরিচয়ে একজনকে নিয়ে গেলে ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বিয়ে সম্পন্ন হয়।

বিয়ের পরপরই তিনি আশুলিয়ায় জমি কিনছে বলে পরিবারের কাছ থেকে চার লাখ টাকা নিয়ে যায়। দুই মাস ১৫ দিন পরপর বাড়িতে যাতায়াত ছিল তাঁর। এরপর থেকে তিনি খুব একটা আসতেন না। এরপর অসুখ ও নতুন বাসায় ফার্নিচার কিনবে বলে আরও দুই লাখ টাকা নেয় তাঁর পরিবারের কাছ থেকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হঠাৎ একদিন আমাদের পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে এমন পাত্রের কাছে একটি মেয়ের বিয়ে হয়েছে সে বিষয়টি শুনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পাই মইদুল সেখানেও বিয়ে করেছে। পরে খোঁজ খবর নিতে মানিকগঞ্জে তার বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে তার মাকে পাই। কিন্তু সে চাকরি করে না সেটা নিশ্চিত হই। আজকে ডিবি অফিসে এসে জানতে পারি সে ১৩টি বিয়ে করেছে। এখন যা হওয়ার তাই হয়েছে। আমাদের দাবি তার কঠিন বিচার হোক। যেন আর কোনো মেয়ের জীবন এভাবে নষ্ট না হয়।’

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মেদ ভূঞা বলেন, আটক দুজনের কাছ থেকে প্রতারণা করার কিছু ছবি এবং আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়। তাঁদের থেকে তথ্য জেনে প্রতারিত হওয়ার পরিবারগুলোকে জানানো হয়। এরপর প্রতারিত হওয়া ছয়টি পরিবারে আজকে উপস্থিত হয়। ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর