রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ৪:১০ : অপরাহ্ণ
আজ ২৬ রজব, বৃহস্পতিবার পবিত্র শবে মেরাজ। ইসলাম ধর্মের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো মেরাজ। ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা এই রাতে পরম করুণাময় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন।
ফারসি শব শব্দের অর্থ রাত। আর আরবি মেরাজ শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বগমন বা সিঁড়ি।
এ দিন দিবাগত রাতে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ঊর্ধ্ব জগতে গমন করেন এবং সাত আসমান পেরিয়ে মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং মুসলিমদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়ে ফেরেন।
মেরাজ একদিকে যেমন হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর অন্যতম মুজেজা (অলৌকিক বিষয়); তেমনিভাবে এটি মুসলিম উম্মাহর জন্যও অনেক তাৎপর্যপূর্ণ।
পবিত্র কুরআনে মক্কা মোয়াজ্জমা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমণকে পবিত্র ‘ইসরা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ইসরা অর্থ রাতে ভ্রমণ করা। মক্কা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত রাসুল (সা.)-এর বিশেষ ভ্রমণ ইসরা হিসেবে পরিচিত।
হাদিসে বায়তুল মুকাদ্দাস (আল-আকসা মসজিদ) থেকে সিদরাতুল মুনতাহা (সপ্তম আসমানের শেষ প্রান্ত) পর্যন্ত উপনীত হওয়া ও আরশে আজিমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের মহিমান্বিত ঘটনাকে মেরাজ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
হযরত মুহাম্মদ (সা.) নবুয়তের ১১ বছরে ৬২০ খৃষ্টাব্দে রজব মাসের ২৬ তারিখ রাতে সশরীরে জাগ্রত অবস্থায় হযরত জিবরাইল (আ.) ও হযরত মিকাইল (আ.) এর সঙ্গে বিশেষ বাহন বোরাকের মাধ্যমে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা হয়ে সপ্তম আকাশের উপরে আরশে আজিমে (আল্লাহর সিংহাসন) যান।
প্রথম আসমান থেকে একে একে সপ্তম আসমান এবং সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত এবং সেখান থেকে একাকী রফরফ বাহনে আরশে আজিমে পৌঁছান ও আল্লাহ তায়ালার দিদার লাভ করার পরম সৌভাগ্য অর্জন করেন।
তিনি সেখানে জান্নাত-জাহান্নামসহ আল্লাহর বিভিন্ন কুদরত প্রত্যক্ষ করেন। অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের সমস্ত কিছুর অপার রহস্য।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন, ‘পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতের বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি, যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। তিনিই সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।’-(সূরা ইসরা : আয়াত ১)।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা হচ্ছে ‘মেরাজ’। মেরাজ ইসলামের ইতিহাসে এমনকি পুরা নবুওয়াতের ইতিহাসেও এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। কারণ হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছাড়া অন্য কোনো নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি।
সারা পৃথিবীর মুসল্লিম উম্মার মতো বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র এই রাত পালন করবেন।
পবিত্র শবে মেরাজ উপলক্ষে মুসলিমরা আজ দেশব্যাপী সব মসজিদে মিলাদ মাহফিল, নফল নামাজ আদায়, জিকির আসকার, কুরআন তেলাওয়াতসহ রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি করবেন।