রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ ১০:৩৪ : পূর্বাহ্ণ
বাংলাদেশে ৭ জুনয়ারি নির্বাচন কোনোভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে আবারও মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সাথে বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিকাশে ভারতের প্রভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটেছে-এমন অভিযোগ মানতে নারাজ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে করা একাধিক প্রশ্নের জবাবে এভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারি জানতে চান, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুসারে কানাডার একটি তদন্তে জানা গেছে, রাশিয়া ও চীনের পাশাপশি দেশটির নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে ভারত। শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় বসাতে বাংলাদেশের নির্বাচনেও ভারতের হস্তক্ষেপের বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনসম্মুখে বলেছেন— ভারত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতোই এবারও তাদের নির্বাচনী বিজয়ে পাশে ছিল। সমালোচকরা বলছেন-ভারতের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিকাশের নীতি থেকে পিছু হটেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, কানাডার তদন্তের বিষয়ে আমার আসলে কিছু বলার নেই। এ বিষয়ে কানাডা তথ্য দিতে পারবে। আমি যে বিষয়ে কথা বলবো, সেটি হলো, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে আমরা দেখতে পেয়েছি। বাংলাদেশ ও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি বলবো, যেমনটা আমরা বহুবার বলেছি বাংলাদেশ ও অন্যদের বেলায়, তা হলো শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তায় অগ্রগতি। এটাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে আছে। গণতান্ত্রিক নীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অব্যাহতভাবে যোগাযোগ রাখছি আমরা। বাংলাদেশের সব মানুষের শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য এসব গুরুত্বপূর্ণ।
ম্যাথিউ মিলারের কাছে সাংবাদিক মুশফিক আরও জানতে চান-রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক কর্মী, যাদেরকে আটক রাখা হয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশন। শাসকগোষ্ঠী ৭ই জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে জালিয়াতি করার জন্য বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের, বিএনপির নেতাদের সহ বিরোধী ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। নির্বাচনের আগেই ঘোষিত ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতির প্রেক্ষিতে গণতন্ত্রকে কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর বাধা দেয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আপনি এর আগে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমাদের মূল্যায়ন শুনেছেন। এই নির্বাচনকে আমরা কোনোভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু মনে করি না। নির্বাচনের সময়ে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের বিষয়েও আমরা উদ্বেগ জানিয়েছি। আমি দুটি বিষয় নিয়ে কথা বলবো। প্রথমত, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের জন্য সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। দ্বিতীয়ত, বিরোধী দলের সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া এবং নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে।