রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ ৩:০২ : অপরাহ্ণ
কত হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের পর দুর্নীতি হিসেবে গণ্য করা হবে-আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে এই প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তার (কাদের) বক্তব্য প্রমাণ করে দুর্নীতিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, মিথ্যা বানোয়াট কথা বলার জন্য আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে। ওবায়দুল কাদের সাহেব গতকাল বলেছেন-দুর্নীতি সারা বিশ্বেই আছে, শুধু বাংলাদেশকে অপবাদ দেওয়া হয়। তার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বলতে চাই, দুর্নীতি হয়তো সারাবিশ্বেই কমবেশি থাকতে পারে, কিন্তু বিশ্বব্যাপী আওয়ামী মার্কা দুর্নীতির কলঙ্ক তিলক আর কোথাও আছে বলে জানা নেই।
এই বিএনপি নেতা বলেন, যে দেশে একটা বালিশের দাম ২৭ হাজার টাকা, বালিশের কাভারের দাম ২৮ হাজার টাকা, পর্দার দাম ৩৩ হাজার টাকা। করোনাকালে চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। রেল বিভাগে টাকা বিনিময় বাণিজ্যের কথা সবার নিশ্চয়ই স্মরণে আছে। গভীর রাতে মন্ত্রীর এপিএসের বাসায় ৭০ লাখ টাকার স্তূপের কথা অর্থাৎ কালো বিড়ালের কথা কেউ ভুলে যায়নি। দুর্নীতির এ রকম লঙ্কাকাণ্ড পৃথিবীর কোথাও ঘটে না।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এখন টিআইবি বলছে, এই দুর্নীতি বর্তমানে আরও অবনতিশীল হয়েছে। আর এজন্যই টিআইবিকে বিএনপির দালাল বলা হচ্ছে। বিএনপির শীর্ষ নেতাসহ হাজারো নেতাকর্মী কারাগারে, এরা কি কারণে কারাবন্দি, সেই কথাটি সাবলিলভাবে ফাঁস করেছেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। এখন ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি কখন ড. আব্দুর রাজ্জাককে বিএনপির দালাল বলবেন, সেটির জন্য জাতি অপেক্ষা করছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, জনগণ ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ায় প্রতিশোধ নিতে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে সরকার। জনগণ প্রত্যাখ্যাত একদলীয় ডামি সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা পরই জানা গেল আবাসিক পর্যায়ে গ্যাসের প্রিপেইড মিটার ভাড়া ১০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। মিটার চালানো ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় সমন্বয় করতেই নাকি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মিটার ভাড়া এক লাফে দ্বিগুণ বৃদ্ধি ৭ জানুয়ারি নীরবে সার্কাস দেখার শাস্তি হিসেবে জনগণের ওপর ধার্য করা হয়েছে।
ভোটারবিহীন সরকার কখনোই জনকল্যাণমুখী হতে পারে না মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এরা অবাধ লুণ্ঠনের যে নজির তৈরি করেছে, তা পৃথিবীতে বিরল। বেপরোয়া দুর্নীতি আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুযোগ দিয়ে এরা রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থা গড়ে তুলেছে। এদেরকে দিয়েই প্রবল জনমতকে দমন করা হয়। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির ওপর নামিয়ে আনা হয় এক ভয়াবহ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। দলীয় ক্যাডার, সন্ত্রাসী আর সিন্ডিকেটবাজদেরকে ভরণ-পোষণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রের কোষাগার শূন্য করা হয়েছে। তথাকথিত উন্নয়নের নামে যেভাবে হরিলুট হয়েছে, সেটি পূরণ করতেই এরা রপ্তানি খাত থেকে তহবিল কমাচ্ছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, কালো পতাকা মিছিলে পুলিশ অতর্কিত হামলা করেছে। কালো পতাকা মিছিল থেকে সারা দেশে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৪৫৬ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার বলে বেড়ালেও উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি নেতাকর্মীদের আগ্রহ নেই এবং আন্দোলনেই তারা উদ্যমী। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে পরিণতি কী হবে সেটা জেনেই অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন দেয় না সরকার। সত্য ন্যায়ের পক্ষে যারা কথা বলে তাদেরই বিএনপির দোসর হিসেবে প্রচার করছে আওয়ামী লীগ।