রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ৫:০৪ : অপরাহ্ণ
জীবনে কীভাবে সফল হবে সে বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে দেশের খ্যাতনামা শিল্পগ্রুপ পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমি ১০০ টাকা বেতনের চাকরি থেকে আজকে এ অবস্থানে এসেছি। একজন মানুষ জীবনে কত বড় হবে সেটা নির্ভর করবে সে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কতটুকু কাজ করলো।’
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর বারিধারায় ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস) এর আইন বিভাগের নবীনবরণ, বিদায়ী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. জাকির হোসেন, সম্মানিত অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ান হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম এবং ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রশীদ।
ইউআইটিএসের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান সুফি মিজান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যদি বড় হতে চাও তাহলে সময়কে নষ্ট করবে না। খাওয়ার সময় খাবে, ঘুমের সময় ঘুমাবে, পড়ার সময় মনপ্রাণ দিয়ে পড়বে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন থাকবে লাইব্রেরিতে সময় দেবে।’
একুশে পদকপ্রাপ্ত এই শিল্পপতি বলেন, ‘আমরা আমাদের জন্য না, আমরা এসেছি পরের জন্য। আমরা নিজেকে যতবেশি অন্যের জন্য নিয়োজিত রাখবো, বিধাতা আমাদেরকে ততো বড় করবেন।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সুফি মিজান বলেন, ‘তোমাদেরকে নিয়ে এই সোনার বাংলাকে হীরার বাংলা গড়ে তুলবো। তোমাদেরকে নিয়ে আমি বিশ্বজয় করবো। আমার জীবনের ইচ্ছা, তোমাদেরকে নিয়ে আমি চাঁদের দেশে যাবো, ইনশাআল্লাহ।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. জাকির হোসেন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘একজন ভালো আইনজীবী কিংবা জজ হতে হলে আইনের সকল খুঁটিনাটি বিষয় জানতে হবে। যাদের পড়াশোনার অভ্যাস নেই, তাদের জজ হওয়া উচিত না, আইনজীবী হওয়া উচিত না, কারণ এতে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি অনেক আইনজীবীকে দেখেছি, তারা মাঠে খুব ভাল বক্তব্য দেন। কিন্তু তারা যখন কোর্টের সামনে আসে তখন যেন ভয়ে ভয়ে থাকেন। তাদের হয়তো মাঠে বক্তব্যে দেওয়ার নলেজ আছে, কিন্তু লিগ্যাল বিষয়ে প্রশ্ন করলে বলতে পারেন না।’
বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বিচারপতি জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশে ১৩০০ বেশি আইন আছে, সবগুলো জানা সম্ভব না। তবে ৩০টি আইন পড়ে সব আইন বুঝতে হবে।’
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ান হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া সরকারের পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে নানা চুক্তি রয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার চুক্তি আছে। দুই দেশ আগামীকে শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতা ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হবে বলে আশা করছি।’
ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রশীদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘পড়াশোনার বিকল্প নেই। সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে হবে। তিনি বলেন, এই চার-পাঁচ বছরের জার্নিতে লেখাপড়ার পাশাপাশি, অর্থাৎ শিক্ষার সঙ্গে দীক্ষারও প্রয়োজন। দীক্ষা যদি না থাকে তাহলে শিক্ষা কোনো কাজে লাগবে না।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউআইটিএসের বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজের সদস্য মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ‘আমার আব্বা সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের স্বপ্ন ইউআইটিএস। তিনি স্বপ্ন দেখেন, ইউআইটিএসের মাধ্যমে যারা পড়ালেখা করবেন, তারা শিক্ষার সাথে দীক্ষা, বিদ্যার সাথে বিনয়, কর্মের সাথে নিষ্ঠা এবং জীবনের সাথে প্রেম-বোধ-আচার এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আপনারা সম্মৃদ্ধ হবেন। সেটা যদি হয় তখনই আমার আব্বার স্বপ্ন পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হবে।’
ইউআইটিএসের বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজের সদস্য মোহাম্মদ আকতার পারভেজ বলেন, ‘আপনারা যেখানে পড়ছেন সেই ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি শুধু এই ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতাই নন, তিনি আরও ২৭টি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এবং প্রতিষ্ঠাতা। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার পর আপনারাদের চাকরিতে যোগ দেওয়ার কোনো সমস্যা হবে না। অনেকেই এই ইউনিভার্সিটিতে পড়া শেষে এখন কাজ করছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু হাসান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইউআইটিএসের আইন উপদেষ্টা ও আইন অনুষদের ডিন, মো.আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সিরাজ উদ্দীন আহমেদ ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম এবং আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রোস্তমা বেগম চৌধুরী।