রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১০ জানুয়ারি, ২০২৪ ৬:১৫ : অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠান হবে। এর আগে আজ বুধবার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন।
নতুন মন্ত্রিসভায় চট্টগ্রাম থেকে কারা স্থান পাচ্ছেন তা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে নানামুখী আলোচনা চলছে। তবে কারও কাছেই নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।
চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের মন্ত্রিসভায় চট্টগ্রাম থেকে স্থান পেতে পারেন এমন পাঁচজনের নাম জোরালোভাবে আলোচনা হচ্ছে।
এদের মধ্যে রয়েছেন দুজন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য। এরা হলেন-রাঙ্গুনিয়া আসন থেকে নির্বাচিত ড. হাছান মাহমুদ ও নগরীর কোতোয়ালী আসন থেকে নির্বাচিত মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
এ ছাড়া টেকনোক্র্যাট কোটায় তিনজনের নাম আলোচনায় আছে। এরা হলেন-পটিয়ার সন্তান প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস, লোহাগাড়ার সন্তান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া এবং আনোয়ারার সন্তান ওয়াসিকা আয়েশা খান।
দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, হাছান মাহমুদ ইতোমধ্যে দুবার মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন। তাই এবার নতুন মন্ত্রিসভায় তার স্থান পাওয়ার সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি।
হাছান মাহমুদ ২০০৮ সালের মন্ত্রিসভায় প্রথমে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং পরে বন ও পরিবেশমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তবে ২০১৪ সালের মন্ত্রিসভায় তিনি স্থান পাননি।
সূত্রটি জানিয়েছে, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল গত পাঁচ বছর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উপমন্ত্রী হিসেবে ভালো পারফরমেন্স করেছেন। এ কারণে তাকে এবার শিক্ষা কিংবা অন্য মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
এদিকে টেকনোক্র্যাট কোটায় ড. আহমদ কায়কাউস মন্ত্রিসভায় স্থান পেলে তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
ড. আহমদ কায়কাউস যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। যে কারণে আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকে ধারণা করছেন, আহমদ কায়কাউস মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীর দায়িত্বে থাকলেও বিপ্লব বড়ুয়া গত দুটি সংসদ নির্বাচনে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে দলের মনোনয়ন চাননি। তাই তাকে টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী করা হতে পারে বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে জোরালো আলোচনা আছে।
আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডয়াম সদস্য প্রয়াত আতাউর রহমান খান কায়সারের মেয়ে ওয়াসিকা আয়েশা খান গত দুটি সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চেয়েও পাননি। তাই এবার তাকে টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করা হতে পারে বলে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে।
ওয়াসিকা গত দুটি সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পেলেও তিনি সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ ছাড়া তাকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি করা হয়।
দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, আনোয়ারা আসন থেকে নির্বাচিত সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ এবার মন্ত্রিসভায় স্থান না পেতে পারেন। কারণ তিনি ইতোমধ্যে দুবার মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন। ২০১৪ সালের মন্ত্রিসভায় তাকে ভূমি প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৮ সালের মন্ত্রিসভায় ভূমিমন্ত্রী করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রিসভায় চট্টগ্রাম থেকে তিনজন স্থান পান। এরা হলেন-ড. হাছান মাহমুদ (তথ্যমন্ত্রী), সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ (ভূমিমন্ত্রী) এবং মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (শিক্ষা উপমন্ত্রী)।
২০১৪ সালের মন্ত্রিসভায় চট্টগ্রাম থেকে চারজন স্থান পান। এরা হলেন-ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন (গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী), আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (প্রথমে পানিসম্পদমন্ত্রী, পরে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী), সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ (ভূমি প্রতিমন্ত্রী) এবং টেকনোক্র্যাট কোটায় নুরুল ইসলাম বিএসসি (প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী)।
২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রিসভায় চট্টগ্রাম থেকে চারজনকে মন্ত্রী করা হয়। এরা হলেন-ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন (বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী), ডা. আফছারুল আমীন (প্রথমে নৌ পরিবহনমন্ত্রী, পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী), ড. হাছান মাহমুদ (প্রথমে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পরে বন ও পরিবেশমন্ত্রী) এবং টেকনোক্র্যাট কোটায় দিলীপ বড়ুয়া (শিল্পমন্ত্রী)।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের ১৬ আসনে বিজয়ী হলেন যারা