রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৬ জানুয়ারি, ২০২৪ ১০:৪৪ : অপরাহ্ণ
এবারের নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আগে আজ শনিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে কার্যকরভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে নির্বাচন অধিক পরিশুদ্ধ ও অর্থবহ হয়। তাতে জনমতেরও শুদ্ধতর প্রতিফলন ঘটে। নির্বাচন প্রক্রিয়া ক্রমান্বয়ে সংহত ও টেকসই হয়। কিন্তু নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিগত প্রশ্নে মতবিরোধের কারণে এবারের নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত সেরকম রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। নির্বাচনী সার্বজনীনতা প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি। তারপরও ২৮টি দল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে প্রায় ২৩ হাজার দেশি ও প্রায় ২০০ বিদেশি পর্যবেক্ষক কাজ করবেন।
সিইসি বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু, নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক নেতৃত্বে মতভেদ আছে। মতভেদ থেকে সহিংসতা কাম্য নয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় নাশকতা ও সহিংসতা যে একেবারেই হচ্ছে না, তা বলা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রীয় সম্পদের পাশাপাশি মানুষ আহত-নিহত হচ্ছে। চলমান এ অবস্থার স্থায়ী সমাধান ও অবসান প্রয়োজন। রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এ বিষয়ে আন্তরিক ও উদ্যোগী হতে হবে।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো সহিংস পন্থা পরিহার করে কেবল শান্তিপূর্ণ পন্থায় নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতে জনমনে আস্থা সঞ্চারিত হয়েছিল। কিন্তু, অবরোধ ও হরতালের মধ্যে সহিংসতা দৃশ্যমান হচ্ছে। ট্রেনে-বাসে-ভোটকেন্দ্রে আগুন দেওয়া হচ্ছে। কারা দায়ী সেটি আমাদের বিবেচ্য নয়। তবে, নাশকতা ও সহিংসতার সাম্প্রতিক ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। তারপরও আমরা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে আমরা জনগণকে অনুরোধ করছি, আপনারা সব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা পরাভূত করে নির্ভয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব ধরনের নির্বাচনী অনিয়ম প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাহসী, সৎ, দক্ষ ও অনুগত পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করে প্রার্থী হিসেবে আপনাদের নিজ নিজ অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষার প্রাণান্ত চেষ্টা আপনাদেরই করতে হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পোলিং এজেন্ট না থাকলে সম্ভাব্য ভোট কারচুপি কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব নাও হতে পারে। নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত সব কর্মকর্তা সৎ, নিরপেক্ষ ও অবিচল থেকে আইন ও বিধি-বিধান অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যথা হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, প্রিজাইডিং অফিসার যে কোনো মূল্যে যে কোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করে ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বাধ্য। প্রিজাইডিং অফিসারকে সহায়তা করতে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট অবস্থান করবে।