মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪ | ৩১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৫ জিলকদ, ১৪৪৫

মূলপাতা দেশজুড়ে

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে টাকার পাহাড়! এবার মিললো ৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা


রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ প্রকাশের সময় :৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১১:০৭ : অপরাহ্ণ
আজ শনিবার দিনভর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া টাকা গণনা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স যেন টাকার পাহাড়! ৩ মাস ১৮ দিন পর মসজিদটির নয়টি লোহার দানবাক্স থেকে এবার মিলেছে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা। যা অতীতের সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।

আজ শনিবার রাত ১০টার দিকে গণনা শেষে এই হিসাব পাওয়া যায়। নগদ টাকা ছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া গেছে।

এর আগে সকাল পৌনে ৮টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্স কমিটির আহ্বায়ক ও কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।

দানবাক্সগুলো থেকে টাকা বের করে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এবার ২৩ বস্তা টাকা হয়। এরপর টাকাগুলো মেঝেতে ঢেলে গণনা করা হয়।

১৪ ঘণ্টা ধরে ১৩৮ জন ছাত্র, রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে মোট ১৯৮ জন মানুষ টাকাগুলো গণনার কাজ করেন।

টাকা গণনা দেখতে শহরের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ মসজিদে ছুটে আসেন।

এর আগে গত ১৯ আগস্ট এই মসজিদের আটটি দানবাক্স থেকে ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল।

প্রতি চার মাস পর পর মসজিদটির দানবাক্সগুলো খোলা হয়। দানের টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার আরও একটি দানবাক্স বাড়ানো হয়েছে। এখন পাগলা মসজিদে দানবাক্সের সংখ্যা ৯টি।

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছে বহু বছর আগে।

জনশ্রুতি রয়েছে, এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বসবাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝপথে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে সব ধর্মের লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। ওই পাগল সাধকের মৃত্যুর পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী।

কিন্তু ওই সাধকের মৃত্যুর পর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে সেখানে দেশের দূর-দূরান্তের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। মানত কিংবা দান খয়রাত করলে মনের বাসনা পূরণ হয়-এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের নারী-পুরুষ মানত নিয়ে আসেন এই মসজিদে। এ ইতিহাস প্রায় আড়াইশ বছরেরও অধিক সময়ের বলে জানা যায়।

পাগলা মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করছে এই মসজিদে। যারা দান করতে আসেন তারা বলে থাকেন, এখানে দান করার পরে নাকি তাদের আশা পূরণ হয়েছে। এই বিশ্বাস থেকেই দূর-দূরান্তের মানুষও এখানে দান করতে ছুটে আসেন। মজার বিষয় হচ্ছে, দান সিন্দুক খুললে চিঠিপত্রও পাওয়া যায়। সেসব চিঠিতে দানকারীরা নিজেদের মনের বাসনার কথা লিখে দেন।

আরও পড়ুন: পাগলা মসজিদের কে সেই ‘পাগলা সাহেব’

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর