রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১০:১৯ : পূর্বাহ্ণ
সরকার পতনের দাবিতে নবম ধাপে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা জোটের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হয়েছে। আজ রোববার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে সর্বাত্মক এ অবরোধ চলবে।
সংবাদপত্রের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, অক্সিজেন সিলিন্ডার গাড়ি ও জরুরি ওষুধ পরিবহন এ অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে।
অবরোধে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলছে না। রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সকাল থেকে কোনো দূরপাল্লার বাস ছাড়েনি। যাত্রীর অপেক্ষায় টার্মিনালের কাউন্টারগুলো। কিন্তু যাত্রী নাই। দু-একটি বাস দীর্ঘক্ষণ পরে ছাড়ে।
রাজধানীর কিছু কিছু এলাকায় বাহী বাস চললেও তাতে যাত্রী ছিল কম। তবে সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি ও রিকশা চলাচল করছে।
এদিকে অবরোধ শুরুর আগেই গতকাল শনিবার রাত থেকে সকাল পর্যন্ত রাজধানীতে ৬টি গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সায়েদাবাদ, গাবতলী টার্মিনাল, মিরপুর, লালমাটিয়া, তেজগাঁও ও আগারগাঁওয়ে এসব গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে চারটি বাস, একটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেট কার রয়েছে। ঢাকার বাইরে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় একটি ট্রাকে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
অবরোধ সমর্থনে সকালে রাজধানীর কাকরাইল ও বনানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিক্ষোভপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ সরকার দেশে ‘আমরা আর মামুরা’ স্টাইলে নির্বাচন করতে অপচেষ্টা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ এ ধরনের নির্বাচন হতে দেবে না।’’
তিনি বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা দেশকে বিক্রি করে হলেও ক্ষমতায় থাকতে চান। তার মধ্যে কোন ধরনের দেশপ্রেম নেই। দেশ থাকলো না থাকলো, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব থাকলো না থাকলো, তাতে তার কোন কিছু আসে যায় না। তার চাই শুধু ক্ষমতা। কিন্তু চক্রান্ত করে আর ক্ষমতায় থাকা যাবে না।’’
ওদিকে হাতিরপুলে ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
একই সময়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
এর আগে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে অষ্টম দফায় ১৫ দিন অবরোধ ও চারদিন হরতাল পালন করে বিএনপি, জামায়াত ও তাদের সমমনা দলগুলো।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর হরতাল এবং ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর মোট তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা জোট।
এরপর ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায়, ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফায়, ১২ ও ১৩ নভেম্বর চতুর্থ দফায়, ১৪ ও ১৫ নভেম্বর পঞ্চম দফায় অবরোধ, ১৯ ও ২০ নভেম্বর হরতাল, ২২ ও ২৩ নভেম্বর ষষ্ঠ দফায় অবরোধ, ২৬ ও ২৭ নভেম্বর সপ্তম দফায় অবরোধ এবং অষ্টম দফায় ২৮ নভেম্বর অবরোধ ও ২৯ নভেম্বর হরতাল কর্মসূচি পালন করে তারা।