অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান। গত ২২ নভেম্বর থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অবস্থান করছেন। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা ও ওয়াশিংটনের একাধিক কূটনৈতিক সূত্র বাংলাদেশ দূতের ছুটিতে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা এবং সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষেই রাষ্ট্রদূত ছুটিতে রয়েছেন। কিন্তু তার বর্তমান অবস্থান কোথায়? সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি।
এ নিয়ে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তবে ওয়াশিংটনের দায়িত্বশীল একটি সূত্র দাবি করেছে, রাষ্ট্রদূত প্রায় এক মাসের ছুটিতে গেছেন। তিনি বর্তমানে তৃতীয় একটি মহাদেশে অবস্থান করছেন। যেখানে তার সন্তান এবং পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। সেখান থেকে তার ঢাকায় ফেরার কথা।
তবে আদৌ তিনি দেশে ফিরছেন কিনা? ফিরলে কবে পৌঁছাবেন, এখানে সরকারের কোনো পর্যায়ে তার দেখা-সাক্ষাতের সম্ভাবনা আছে কিনা? সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সূত্রমতে, রাষ্ট্রদূত ছুটিতে যাওয়ার দিন অর্থাৎ ২২ নভেম্বর ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস নোট ভারবাল পাঠিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টকে বিষয়টি অবহিত করেছে।
দূতাবাসের নোটে জানানো হয়, ২২ নভেম্বর মধ্যাহ্ন থেকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থাকবেন। রাষ্ট্রদূতের অনুপস্থিতিতে দূতাবাসের ইকোনমিক মিনিস্টার মাহাদী হাসান চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
রাষ্ট্রদূতের ছুটি কবে শেষ হবে অর্থাৎ তিনি পুনরায় কবে কর্মস্থলে ফিরবেন? সেই দিনক্ষণ উল্লেখ না করে নোটে বলা হয়, রাষ্ট্রদূতের ফেরার বিষয়টি পরবর্তীতে (স্টেট ডিপার্টমেন্টকে) জানানো হবে।
উল্লেখ্য, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা, বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্বতন্ত্র এবং নজিরবিহীন ভিসানীতি কার্যকর করা, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ করতে শর্তহীন সংলাপের আহ্বানসহ নানা ইস্যুতে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন যখন চরমে ঠিক সেই সময়ে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ছুটিতে গেলেন!
স্মরণ করা যায়, ২০২১ সালে ডিসেম্বরে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির কয়েক মাসের মধ্যে তৎকালীন রাষ্ট্রদূত মো. শহীদুল ইসলামকে ফিরিয়ে আনে সরকার। মেয়াদপূর্তির আগে মিস্টার ইসলামের চাকরির চুক্তি বাতিল করা হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত বছরের জুলাইতে নয়াদিল্লিতে থাকা বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান।
চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করা পেশাদার ওই কূটনীতিক বর্তমানে সরকারের সঙ্গে চুক্তিতে কাজ করছেন। নয়াদিল্লিতে থাকা অবস্থায় তার চাকরির নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়। পেশাগত জীবনে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার, জেদ্দা, অটোয়া, বন ও বার্লিনের বাংলাদেশ মিশন এবং হেডকোয়ার্টারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন তিনি।
সূত্র: মানবজমিন