রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ৮:২১ : অপরাহ্ণ
ঢাকায় গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে হামলা, সংঘর্ষ, নিহত, ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়া, গাড়ি ভাঙচুরসহ নানা ঘটনায় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় ৩৪টি ও ঢাকা জেলার চার থানায় পৃথক চারটি মামলা দায়ের হয়েছে।
এর মধ্যে ডিএমপির শাহবাগ থানায় ১টি, রমনায় ২টি, মতিঝিলে ১টি, শাহজাহানপুরে ৬টি, খিলগাঁওয়ে ১টি, রামপুরায় ১টি, মুগদায় ১টি, ডেমরা থানায় ১টি, ওয়ারীতে ১টি, যাত্রাবাড়িতে ২টি, হাতিরঝিল থানায় ২টি, মিরপুর থানায় ১টি, পল্লবীতে ২টি, কাফরুলে ১টি, দারুস সালামে ১টি, শাহআলীতে ১টি, রুপনগরে ১টি, ভাষানটেকে ১টি, ভাটারা থানায় ৩টি, বাড্ডায় ১টি এবং উত্তরা পূর্ব থানায় ৩টি মামলা হয়েছে।
এ ছাড়া ঢাকা জেলার সাভার থানায় ১টি, ধামরাই থানায় ১টি, কেরানীগঞ্জ থানায় ১টি এবং দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ১টি মামলা হয়েছে।
এসব মামলায় বিএনপির ১ হাজার ৬৫৪ জন নেতাকর্মীকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত হিসাবে আরও পাঁচ হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বেশিরভাগ মামলা পুলিশ বাদী হয়েছে। কিছু মামলায় বাদী হয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।
বিভিন্ন মামলার এজাহার পড়ে দেখা গেছে, বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের আসামি করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পুলিশ হত্যা মামলা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাসহ ৪টি মামলায় আসামি করা হয়েছে। একইভাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আহমেদ খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, সামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার এবং সদস্য সচিব আমিনুল হককে বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়েছে।
গত ২১ অক্টোবর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ডিএমপির বিভিন্ন থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের একটি পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে।
পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গেছে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে ডিএমপির ৮টি বিভাগ গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়েছে। এসব অভিযানে ১৪৮০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এরমধ্যে রমনা বিভাগের থানা পুলিশ ও ডিবি গ্রেপ্তার করেছে ৯০ জন, লালবাগ ৩২১ জন, মতিঝিল ১২৭ জন, ওয়ারী ৩৫৬ জন, তেজগাঁও ১১৯ জন, মিরপুর ৩৫৩ জন, গুলশান ৮৯ ও উত্তরা ডিভিশন ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ২১ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির ৩১ জন, ২২ অক্টোবর ৪২ জন, ২৩ অক্টোবর ৪২ জন, ২৪ অক্টোবর ৮৫ জন, ২৫ অক্টোবর ১১১ জন, ২৬ অক্টোবর ২০২ জন, সমাবেশের আগের দিন ২৭ অক্টোবর ৩৪০ জন, ২৮ অক্টোবর ৬৯৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর ২৯ অক্টোবর সংঘর্ষের পরদিন ২৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সবমিলিয়ে ৯দিনে ১৭২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার সবাইকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠান।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ কর্মসূচি ছিল। তবে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য, একজন যুবদল কর্মী এবং একজন সাংবাদিক নিহত হন। পুলিশ, সাংবাদিক ও বিএনপি নেতাকর্মীসহ আহত হন সহস্রাধিক।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বিএনপির সঙ্গে পুলিশ ও আ.লীগের তুমুল সংঘর্ষ, বিজিবি মোতায়েন