রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৬ অক্টোবর, ২০২৩ ১০:১৫ : পূর্বাহ্ণ
রাজধানীর গুলশানে বিএনপিপন্থি এক ব্যবসায়ীর বাসায় নৈশভোজে অংশ নিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দেশের প্রতিষ্ঠিত বীমা কোম্পানী প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ডিরেক্টর (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) সৈয়দ আলতাফ হোসেনের উদ্যোগে তার গুলশানের বাসায় এ আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনটি হয়।
সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ওই ব্যবসায়ীর বাসায় যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৯টা অবধি চলা এই নৈশভোজ নিয়ে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক অঙ্গনে অন্তহীন আলোচনা ও কৌতূহলের শেষ নেই।
এই নৈশভোজ নিয়ে নেট দুনিয়াও সরগরম। তবে এ আয়োজনের উদ্দেশ্য এবং অনানুষ্ঠানিক আলোচনার বিস্তারিত তাৎক্ষণিক জানা সম্ভব হয়নি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সম্মানে আয়োজিত ওই ভোজে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকা ছিল বেশ দীর্ঘ। এতে সরকার ও বিরোধী দলের নেতারা ছাড়াও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরা অংশ নিয়েছিলেন।
নৈশভোজ কাম প্রাণবন্ত ওই আড্ডায় অংশ নেয়া রাজনীতি সচেতন অতিথিদের মধ্যকার অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বহুল আলোচিত ২৮ অক্টোবর ছিল মুখ্য আলোচ্য।
তবে সমসাময়িক রাজনীতির অন্যান্য প্রসঙ্গও স্থান পায়।
একটি সূত্র জানায়, ২৮ অক্টোবর ঘিরে রাজনীতিতে কি ঘটতে চলেছে? পরস্পরবিরোধী অবস্থানে থাকা রাজনীতিবিদদের কাছে পেয়ে তা জানা-বোঝার চেষ্টা করেছেন বিদেশি কূটনীতিকরা।
বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সৈয়দ আলতাফ হোসেনের ওই আয়োজনে সঙ্গত কারণেই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের সরব উপস্থিতি ছিল। তবে সেখানে সরকারের প্রভাবশালী দু’জন মন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির (সরকার দলীয়) একজন এমপিরও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিলো। ফলে অরাজনৈতিক আয়োজনটি ক্রমেই রাজনীতির আলাপে জমজমাট হয়ে ওঠে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস যে টেবিলে বসেছিলেন তার ঠিক বামের আসনে বসেছিলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, আর ঠিক ডানের আসনে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল মিন্টু।
গুরুত্বপূর্ণ অতিথি সম্বলিত ওই টেবিলে ভূমিমন্ত্রীর পাশের আসনে বসেছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক এমপি এম নাসের রহমান, বিএনপির সাবেক এমপি জি এম সিরাজ এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট জয়নাল আবেদীনও ছিলেন পিটার হাসের টেবিলে।
দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ওই আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হক ও সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বিএনপি নেতা বরকত উল্লাহ বুলু, গণফোরাম (মন্টু) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্সের ডিরেক্টর তাবিথ আউয়াল, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলাল অংশ নিয়েছিলেন।
ওই নৈশভোজে আমন্ত্রিত বিদেশি কূটনীতিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গাপুর দূতাবাসের ইউসুফ এম আশরাফ, শিলা পিল্লাই, মার্কিন দূতাবাসের চিফ পলিটিক্যাল কাউন্সিলর শ্রেয়ান সি. ফিজারল্ড প্রমুখ।
অতিথি এবং অংশগ্রহণকারীদের তালিকায় বিভিন্ন ব্যাংক এবং বহুজাতিক কোম্পানীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও ছিলেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২৮ অক্টোবরকে ঘিরে ক’দিন ধরে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে দেশের রাজনীতি। এদিকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন। আগামী ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলো মহাসমাবেশের যে ঘোষণা দিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বিরোধী দলগুলোর সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে?