রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১২ অক্টোবর, ২০২৩ ৮:৫১ : অপরাহ্ণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমেরিকাতে ১৮ দিন ঘুরে এলেন। এখন আবার ব্রাসেলসে (বেলজিয়ামের রাজধানী) যাচ্ছেন। চারদিকে ঘোরাঘুরি শুরু করেছেন। ওই ঘুরে ঘুরে যদি কোনো রকমে সামাল দেয়া যায়…। আর ঘোরাঘুরি করে কোনো লাভ নাই। সময় হয়ে গেছে। আপনাকে বিদায় নিতেই হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে এক ছাত্র কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য এই কনভেনশনের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এতো যদি আপনি জনপ্রিয় হন, তাহলে ভোট দিতে অসুবিধা কোথায়? এতো কিছু বানিয়েছেন। পদ্মা সেতু বানিয়েছেন, টানেল বানিয়েছেন, উড়াল সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বানিয়েছেন। লোকে তো আপনাকেই ভোট দেবে। তাহলে একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। সেটা আপনি করবেন না। কারণ, আপনি জানেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আপনাদের অস্তিত্বও থাকবে না।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, এদেশের সব মানুষ এখন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। আপনাদের হাত থেকে বাঁচতে চায়। এখনো বলছি, সময় আছে দুর্গাপূজার মধ্যে যে ছুটিটা থাকবে, এর মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে আপনারা একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে দেন, ল্যাঠা চুকে যাবে।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যার কপালে এখনো স্বৈরাচারের গুলির দাগ রয়েছে, তাকে অন্যায়ভাবে, বেআইনিভাবে এবং অযাচিতভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। এর ক্ষোভ জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। কোন অবস্থায় গেলে এ্যানির মতো একজন সাহসী ছেলে আদালতে দাঁড়িয়ে বলে-চোর-ডাকাতকেও এভাবে মারে না, আমাকে তারা যেভাবে মেরেছে।’
আরও পড়ুন: আমেরিকার মুরুব্বিদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়ে গেছে: ওবায়দুল কাদের
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ্যানিকে গ্রেপ্তারের ঘটনা থেকে একটা বার্তা পাবেন। সেই বার্তা হচ্ছে—মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকবেন না, হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না। নিজেরা যদি বাঁচতে চান, দেশকে যদি বাঁচাতে চান, তাহলে জেগে উঠতে হবে। রাজপথে লড়াই-সংগ্রাম করে তাদের (সরকার) পরাজিত করতে হবে। অন্যথায় তারা আপনাদের মাথার ওপর চেপে বসবে। আজকে এ্যানিকে যেভাবে মেরেছে, কালকে সবাইকে এভাবে মারবে।’
দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে তরুণদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘অনেকে বলেন, এখন তরুণদের ক্ষোভটা মোবাইল সেটে। স্ট্যাটাস দিলেই ক্ষোভ শেষ। ক্ষোভ মোবাইল সেটে দিলে শেষ হবে না, ক্ষোভ রাজপথে আসতে হবে। রাজপথে এসে তাদের পরাজিত করতে হবে, রুখে দাঁড়াতে হবে।’
ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের সভাপতিত্বে কনভেনশনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নুর, ভাসানী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।