রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১১:৫১ : পূর্বাহ্ণ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে হলে আবার জেলে যেতে হবে। এরপর আদালতে আবেদন করতে হবে। আদালত অনুমতি দিলে তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে ভয়েস অব আমেরিকা বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
২৭ সেপ্টেম্বর (যুক্তরাষ্ট্র সময়) ওয়াশিংটন ডিসিতে ভয়েস অফ আমেরিকাকে এই সাক্ষাৎকার দেন তিনি। শেখ হাসিনা গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে যান।
আজ শনিবার প্রকাশিত ভিডিও সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে প্রশ্ন করা হয়, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতির খবর আমরা পাচ্ছি। তো, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি আপনারা কী পুনর্বিবেচনা করবেন?’
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জিজ্ঞেস করি, পৃথিবীর কোন দেশ সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পেরেছে? পৃথিবীর কোনো দেশ দেবে? তাদের যদি চাইতে হয়, তাহলে আবার জেলে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এখানে আমাদের কোনো…আদালতের কাজের ওপর আমাদের হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তবে হ্যাঁ, যেটুকু করতে পেরেছি তার জন্য সেটা হচ্ছে, আমার যেটুকু সরকার হিসেবে ক্ষমতা আছে, সেটা আমি তার সাজাটা স্থগিত করে তাকে বাড়িতে থাকার পারমিশনটা দেওয়া হয়েছে এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা। সে নিজেই চিকিৎসা নিচ্ছে এখন। বাংলাদেশের সব থেকে দামি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর যদি তাদের যেতে হয় বাইরে তখন…এই এখন যে তাকে আমি বাসায় থাকার পারমিশনটা দিয়েছি, এটা আমাকে উইথড্র করতে হবে। তাকে আবার জেলে যেতে হবে এবং কোর্টে যেতে হবে। কোর্টের কাছে আবেদন করতে হবে। কোর্ট যদি রায় দেয়, তখন সে যেতে পারবে। এটা হলো বাস্তবতা।’
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় আসে।
দেশে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাঁকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। শর্ত দেওয়া হয়, তাকে দেশেই থাকতে হবে।
কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ফিরোজায় ওঠেন, এখনো তিনি সেখানেই থাকছেন। ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়াকে কয়েক দফায় ঢাকার বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
সর্বশেষ গত ৯ আগস্ট রাতে খালেদা জিয়াকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ ৫১ দিন ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাকে এ পর্যন্ত তিন দফা সিসিইউতে নেওয়া হয়।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে ব্লক, আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।