রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ৯:৪৪ : পূর্বাহ্ণ
দীর্ঘ ৫০ দিন ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তারপরও তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যের তেমন কোনো উন্নতি নেই। বরং দিন দিন অবস্থার অবনতি হচ্ছে। মাঝে-মধ্যেই তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে। নিতে হচ্ছে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)। লিভার সিরোসিসের কারণে তার পেটে পানি চলে আসছে। সেটা বের করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অনেকটা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন ৭৮ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়ার শারীরিক জটিল অবস্থার কারণে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে নতুন করে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনটি বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, দ্রুতই এ ব্যাপারে মতামত দেয়া হবে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সরকার অনেকটা ইতিবাচক খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর বিষয়ে। তবে কবে, কোথায় পাঠানোর অনুমতি দেয়া হবে সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।
এদিকে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য কোথায় নেয়া হতে পারে তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে চিকিৎসা সম্ভব বলে বিএনপি মহাসচিবকে জানিয়েছেন তিনি।
অনেকে বলছেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানি নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। হয়তো শনিবার কিংবা রোববারের মধ্যে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এদিকে আরেকটি গুঞ্জনে বলা হয়েছে, সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দিলেও কিছু দেশের নাম উল্লেখ করে শর্ত দিতে চায়। সেক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড কিংবা এশিয়ার কোনো দেশে চিকিৎসা করাতে হবে।
কিন্তু বিএনপি চায় জার্মানি কিংবা যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্য। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন আগে এসব দেশে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। তাছাড়া তার শরীরে যেসব রোগ রয়েছে এবং তার শরীরের বর্তমান যে কন্ডিশন সেটার উপযুক্ত চিকিৎসা উল্লেখিত তিনটি দেশে সম্ভব।
বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর বিষয়ে সরকারের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, শুধু লিভার সিরোসিস নয়, বার্ধক্যজনিত অনেকগুলো রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া। সেজন্য তার এডভান্স মাল্টি ডিসিপ্লিনারি সেন্টারে চিকিৎসা প্রয়োজন। তাই শুরু থেকেই মেডিকেল বোর্ড কয়েকটি দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিয়ে আসছেন। সেগুলো হলো জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্য। তবে সরকার অনুমতি দিলে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা যে দেশে পাঠানোর পরামর্শ দেবেন সেদেশে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়।
তখন থেকে তিনি গুলশানের বাসভবনে অবস্থান করছেন। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই নানা রোগে ভুগছেন। এর আগেও কয়েক দফায় তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা, আবার পরিবারের আবেদন