রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২:৩৪ : অপরাহ্ণ
সংবাদ প্রকাশের জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) কর্মরত এক সাংবাদিককে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় হামলাকারীরা তাকে হুমকি দিয়ে বলে, ‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখবো তোরে কে বাঁচাতে আসে।’
হামলার শিকার সাংবাদিক মোশাররফ শাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং দৈনিক প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। তার কপালে চারটি সেলাই হয়েছে।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে তাকে মারধর করা হয়।
হামলাকারীরা চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও বগিভিত্তিক গ্রুপ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) অনুসারী।
হামলার বিষয়ে সাংবাদিক মোশাররফ শাহ বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমি উপাচার্যের কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও প্রধান প্রকৌশলীকে মারধরের বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য। এ সময় দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগের কর্মী আমাকে প্রথমে পেছন থেকে ধাক্কা দেন। এরপর ছাত্রলীগ নিয়ে কেন প্রতিবেদন তৈরি করেছি তা জানতে চায়। কয়েকজন আমার কপালে, মুখে কিলঘুষি দেন। বুকে লাথি দেন। হাতেও আঘাত করেন।’
মোশাররফ জানান, মারধরের সময় নেতা-কর্মীরা তাকে পরবর্তীতে আর ছাত্রলীগ নিয়ে প্রতিবেদন না ছাপানোর হুমকি দেন। তারা বলেন, ‘আর নিউজ করিস, তারপর তোরে কে বাঁচাতে আসে দেখবো। ছাত্রলীগকে নিয়ে কোনো নিউজ হবে না।’
আহত অবস্থায় মোশাররফকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বুক ও হাতে আঘাত থাকার কারণে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আবু তৈয়ব বলেন, ‘তার কপালে চার সেলাই দিতে হয়েছে। তার হাতেও আঘাত আছে। এক্সরে করাতে হবে। উন্নত চিকিৎসা জন্য তাকে চমেকে পাঠানো হয়েছে।’
ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিএফসির নেতৃত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। আমি খোঁজ নিচ্ছি।’
চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, ‘এর আগেও বারবার সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু প্রশাসন কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলশ্রুতিতেই আবারও এমন ঘটনা ঘটানোর দুঃসাহস দেখিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী ও দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে মেডিক্যালে গিয়ে তাকে দেখে এসেছি। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’