রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

নিরাপত্তার আশ্বাসে মার্কিন দূতাবাস ছেড়ে বাসায় ফিরেছেন এমরান



রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ৯:৫২ : অপরাহ্ণ

নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টা অবস্থানের পর মার্কিন দূতাবাস ছেড়েছেন সদ্য সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৮ মিনিটে এমরান তার স্ত্রী ও তিন মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে দূতাবাস থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হন।

মার্কিন দূতাবাস থেকে বেরিয়ে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিকেলে দূতাবাসে যাওয়ার পর সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আমার ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। দূতাবাস থেকে ফেরার পথে আমার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্যও পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার পর বাসায় চলে এসেছি।’

সাবেক এই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্যের পর তার মনে হয়েছিল, তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। এ জন্য তিনি মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

এর আগে আজ বিকেল ৪টার দিকে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া গুলশানে মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে বহির্বিভাগের অভ্যর্থনা কক্ষে তিন মেয়ে ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বসে থাকেন। তাকে দূতাবাসের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখা যায়। তবে দূতাবাসের নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের সঙ্গে কাউকে কথা বলতে বা দেখা করতে দেয়নি। দূর থেকেও কাউকে ছবি তুলতে দেয়নি।

এ সময় গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো বার্তায় এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি মার্কিন দূতাবাসে আজকে পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। বাইরে পুলিশ। আজকে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে…। আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন যাবৎ অনবরত হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। এই সরকার ভালোবাসার প্রতিদান দেয় জেল দিয়ে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই। স্রেফ ৩টা ব্যাগে এক কাপড়ে আমার ৩ মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।’

গত ৪ সেপ্টেম্বর ডিএজি এমরান সাংবাদিকদের বলেন, ‘শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিবৃতিতে সই করব না।’

পরদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘চিঠিতে সই না করার বক্তব্য দিয়ে এমরান শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।’

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ ১৬০ বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া খোলাচিঠির পক্ষে অবস্থান নেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।

এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তাতে তিনি সই করবেন না বলে জানিয়ে দেন।

সোমবার এমরান আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানানো হয়। যেখানে সোমবার বিকেল ৪টার মধ্যে বিবৃতি সই করার কথা বলা হয়। তবে, আমি ব্যক্তিগতভাবে সই করবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি সই করার সঙ্গে একমত নই।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ড. ইউনূসের বিষয়ে যে বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে সেটির প্রয়োজন নেই। ওনার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো চলছে তা অন্যভাবে ডিল করা যেতো। এটা ওনাকে চাপে রাখার জন্যই করা হচ্ছে বলে মনে হয়েছে। উনি বাংলাদেশের জন্যই যে শুধু সম্মান বয়ে এনেছেন তা কিন্তু নয়, উনি সারাবিশ্বের সম্পদ।’

এর পরপরই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন বলে মন্তব্য করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

আজ সকালে এমরান আহম্মদকে বরখাস্তের বিষয়টি জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

আরও পড়ুন: অবশেষে বরখাস্ত হলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর